রোয়ানুর প্রভাবে বেড়িবাঁধে ভাঙন, ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

13256253_801606349970396_8828208422487766341_nদেশনিউজ.নেট: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু শনিবার দুপুরে খুলনার উপকূল অতিক্রম করে। এসময় দাকোপ, পাইকগাছা, ডুমুরিয়া ও কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আঘাত হানে। এসব এলাকায় সহস্রাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং বেশ কিছু গাছপালাও উপড়ে পড়েছে। ভেঙে গেছে দুটি নদীর বেড়িবাঁধও।
এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সহযোগিতা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। তবে প্রাণহানির কোনও খবর পাওয়া যায়নি।

খুলনার ৫টি উপজেলার ২০ হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। রবিবার বিকাল থেকে তারা নিজ বসতভিটায় ফিরতে শুরু করে। মংলা বন্দরসহ সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় কোনও ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। রোয়ানু অতিক্রম করার পর শনিবার সন্ধ্যায় আশঙ্কা কেটে যাওয়ায় বন্দরে নিজস্ব সতর্কতা সংকেত ৩ প্রত্যাহার করা হয়। রবিবার থেকে বন্দরের পরিবেশ স্বাভাবিক হয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, রোয়ানুর প্রভাবে খুলনায় ৫১ ঘণ্টায় ১১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। শনিবার ভোর ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

খুলনা জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখার সূত্র জানান, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে খুলনার উপকূলবর্তী দাকোপ উপজেলার সূতারখালী, কামারখোলা ও তিলডাঙ্গা এলাকার ৫ শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। কয়রা উপজেলার বেদকাশি, ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর ও চাঁদগড় এবং পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী এলাকায়ও বেশ কিছু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত এবং বাঁধ ভেঙে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। জেলা প্রশাসন থেকে দাকোপের সূতারখালি ও তিলডাঙ্গা এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ১৬০টি পরিবারের তালিকা করা হয়েছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মেহনাজ জানান, শরাফপুর বাঁধ কিছুটা ভেঙে গেছে। আগে থেকেই বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বাঁধে কাজ চলা অবস্থায় ঝড়ের কবলে পড়ার কারণে ৭০০ বাসিন্দাকে আগে থেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ২ হাজার ৮৫০ জনকে ভান্ডারপাড়া ও গুটুদিয়াসহ সাইক্লোন শেল্টার এবং বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয় দেওয়া হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা তাদের শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করেন। সন্ধ্যা নাগাদ আশ্রয় কেন্দ্র থেকে লোকজন বাড়ি ফিরতে শুরু করে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা একেএম মান্নান বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

মংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলী প্রিন্স বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু এখানে কোনও ধরনের ক্ষতি হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email