সুইডেনপ্রবাসী নারী ও স্বামীকে পুলিশের নির্যাতন, টাকা ছিনতাই

02নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পুলিশের বিরুদ্ধে ‘ছিনতাই ও দুর্ব্যবহারের’ অভিযোগ এনেছেন সুইডেনপ্রবাসী নারী খুকুমনি পারভীন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে যশোর-বেনাপোল সড়কের ঝিকরগাছার পাঁচপুকুর এলাকায় টহল পুলিশ তাকে ও তার স্বামীকে থামায়। এরপর তারা তল্লাশির নামে খুকুমনির হাতব্যাগে থাকা নগদ তিন হাজার ইউএস ডলার ছিনিয়ে নেয়। এ সময় বাধা দিলে পুলিশ খুকুমনি ও তার স্বামী মিজানুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে নানা কটূক্তি করে।

সুইডিশ নাগরিক খুকুমনি পারভীন ও তার স্বামী মিজানুর রহমান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে খুকুমনি বলেন, ‘ঝিকরগাছা থানার এসআই এজাজ ও সঙ্গীয় ফোর্সরা আমার সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেছেন।’

নড়াইলের কালিয়া উপজেলা সদরের মিজানুর রহমানের স্ত্রী সুইডিশ নাগরিক খুকুমনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে আমি সুইডেনে বসবাস করি। পেশায় আমি একজন সেবিকা। আমার স্বামী মিজানুর রহমানও সুইডেনের নাগরিক এবং একজন প্রকৌশলী।’

২০১৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর এই দম্পতি দেশে ফেরেন। পয়লা জানুয়ারি খুকুমনি ভারতে আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যান। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে তিনি বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে ফেরেন।

বেনাপোল বন্দর থেকে তাকে নিয়ে আসতে তার স্বামী মিজানুর রহমান আগেই বেনাপোল বন্দরে পৌঁছান। তারা বেনাপোল পোর্ট থেকে একটি ট্যাক্সি ভাড়া করে কালিয়ার উদ্দেশে রওনা দেন।

খুকুমনি বলেন, ‘এসআই এজাজ আমাকে বলেন, যেহেতু তিন হাজার ডলার পাসপোর্টে এনডোর্স করা নেই, তাই এগুলো অবৈধ।’
খুকুমনি ও মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন এবং চরম অপমানিত। সে কারণে পুলিশের সঙ্গে এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলিনি।’

তারা বলেন, ‘দেশে এসে ভাইদের কাছ থেকে এমন ব্যবহার আশা করিনি। কোনো সভ্য দেশের পুলিশ এ ভাষায় কথা বলতে পারে তা চিন্তার মধ্যে ছিল না।’ অবশ্য পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আনীত এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঝিকরগাছা থানার ওসি মোল্লা খবির আহমেদ বলেন, ‘অভিযোগকারীদের বর্ণনা সঠিক নয়। পুলিশ তাদের তল্লাশি করেছে ঠিকই। কিন্তু সুইডেন নাগরিক পরিচয় শোনার পরপরই তাদের সসম্মানে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে এডিশনাল এসপি কে এম আরিফুল হক বলেন, ‘ঘটনাটি যেভাবে শোনা যাচ্ছে আসলে সে রকম কিছু ঘটেছে কি না— তা তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়।’ তিনি অভিযোগকারীদের সংশ্লিষ্ট থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়ার কথা বলেন।

Print Friendly, PDF & Email