• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

র‌্যাব পরিচয়ে রুয়েটের ছাত্রলীগ নেতাকে তুলে নেয়ার অভিযোগ

001নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রলীগ নেতাকে ‘র‌্যাব পরিচয়ে’ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
মো. সাইফুজ্জামান সোহাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক। তার বাড়ি রাজশাহী নগরীর রাজপাড়ার তেরোখাদিয়া পশ্চিমপাড়ায়।

শুক্রবার সকালে রাজশাহী চেম্বারের সম্মেলন কক্ষে সোহাগের পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করা হয়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে র‌্যাব দাবি করেছে, সোহাগকে ধরতে কোনো অভিযান তারা চালায়নি। আর থানা পুলিশ বলছে, তারাও এ বিষয়ে কিছু জানে না।

সাইফুজ্জামান সোহাগের বাবা আক্কাস-উজ জামান বলেন, গত বুধবার রাত তিনটার দিকে ১৫ জনের মতো র‌্যাবের একটি দল সাদা মাইক্রোবাসে এসে পরিচয় দিয়ে বাড়ির গেট খুলতে বলে।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম দিকে গেট খুলতে চাইনি। অনেক জোরাজুরির পর গেট খোলার সঙ্গে সঙ্গে তারা তিন তলায় আমার ছেলে সোহাগের ঘরে যায় এবং ওর ল্যাপটপ খুলে কী কী আছে দেখতে থাকে।’

আক্কাস-উজ জামান বলেন, ওই সময় তাকে এবং তার স্ত্রীকে কয়েকজন মিলে ঘিরে রাখে। তারা কথাও বলতে দেয়নি, ছেলের ঘরেও যেতে দেয়নি। কিছুক্ষণ পর ল্যাপটপ ও ক্যামেরাসহ সোহাগকে তারা ধরে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে আমাদের বলে- সকালে থানায় খোঁজ করবেন।’

সোহাগের বাবার জানান, সোহাগ বিবাহিত। সে ঢাকায় মেডিকেলে পড়ে। খবর পেয়ে বাসায় এসে সে দেখেছে, তার গয়নাও পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা বৃহস্পতিবার সকালে রাজপাড়া থানায় খোঁজ নিতে গেলে বলা হয়েছে- সোহাগ সেখানে নেই।

তিনি বলেন, পুলিশ নাকি কিছুই জানে না। আমরা র‌্যাবের কাছেও গিয়েছি। তারা বলেছে, রাতে নাকি আমাদের এলাকায় কোনো অভিযানই চালায়নি।
সোহাগের শ্বশুর শেখ রেজাউর রহমান দুলাল রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাট্রিজের একজন পরিচালক। সংবাদ সম্মেলনে তিনিও উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় সোহাগের মা শিরিন জামান জানান, র‌্যাব পরিচয়ে যারা এসেছিল, তারা সোহাগের সঙ্গে তার সহপাঠী এক ছাত্রীর বিষয়ে কথা বলেছে। তবে কী কথা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি সোহাগের মা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান হিমেল বলেন, ‘আমরা ঘটনা শুনেছি। দলের নেতাকর্মীদের খোঁজ নিতে বলেছি। দলের কারো সঙ্গে সোহাগের মনোমালিন্য হয়েছে বলে শুনিনি।’
অবশ্য সোহাগকে ‘তুলে নিয়ে যাওয়ার’ খবর পাননি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল আলম বেগ।

এ ঘটনায় সোহাগের বাবা একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন জানিয়ে রাজপাড়া থানার ওসি মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখনো তার খোঁজ পাইনি। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

আর র‌্যাব-৫ এর উপঅধিনায়ক মেজর সালাম বলেছেন, তাদের কোনো দল সোহাগকে গ্রেপ্তারে অভিযানে যায়নি। সোহাগের বাবা আমাদের অভিযোগ দিয়ে গেছেন। আমরা সোহাগের ফোন নম্বর রেখেছি, ট্র্যাক করে দেখার চেষ্টা করছি আসলে কী হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সোহাগের বাবা বলেন, ‘আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ছেলে যদি অপরাধ করেও থাকে, তাহলে তাকে আদালতে সোপর্দ করে আইনের আওতায় আনা হোক।’

Print Friendly, PDF & Email