শিল্পমন্ত্রীর ট্যানারি স্থানান্তরের আলটিমেটাম স্ব-বিরোধী

amuনিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি স্থানান্তরের জন্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন। এই আলটিমেটামকে মন্ত্রীর স্ব-বিরোধী সিদ্ধান্ত মনে করছেন ট্যানারি মালিক ও এর সংগঠনের নেতারা।
রোববার (১০ জানুয়ারি) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সভায় এ নির্দেশনা দেন শিল্পমন্ত্রী।

আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তর না করলে সেখানকার কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে বিসিককে ট্যানারি মালিক বরাবর উকিল নোটিশ পাঠানোরও নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।
মন্ত্রীর এই ঘোষণার পরপরই কয়েকজন ট্যানারি মালিক ও তাদের সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। তারা বলেন, মাননীয় মন্ত্রী যে আলটিমেটাম দিয়েছেন, এটা স্ব-বিরোধী, কারণ সেন্ট্রাল ইফ্ল্যুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ( সিইটিপি) নির্মাণ শেষ হয়নি এখনো। তাহলে সেখানে ট্যানারি মালিকরা গিয়ে কি করবে।

এ বিষয়ে ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) সদ্য বিদায়ী সভাপতি আবু তাহের বলেন, মন্ত্রী সাহেবের সঙ্গে কালকেও (শনিবার) আমাদের কথা হয়েছে। তারাইতো সম্পূর্ণ প্রস্তুত না, আগামী ৩০ জানুয়ারি সিইটিপি ট্রায়াল (পরীক্ষামূলকভাবে) চালু করবে। তাই মার্চের আগে কিভাবে কাজ শুরু করবেন। তিনি বলেন, আমার মনে হয় মন্ত্রী সাহেবকে তার অফিসাররা ভুল বুঝিয়েছেন।

এদিকে আরএমএম লেদার ‌ইন্ডাজট্রিজের চেয়ারম্যান ও বিএফএলএলএফইএ’র (সোমবার) দায়িত্ব নেওয়া সভাপতি মহিউদ্দিন মাহমুদ মাহিন বলেন, মাননীয় মন্ত্রী একজন প্রাজ্ঞ লোক, বর্ষীয়ান নেতা, উনি হয়তো ভেবে চিন্তেই কথা বলেছেন। আমার মনে হয়, মন্ত্রী বিষয়টি বুঝে নিজেই আবার সময় দেবেন।

ট্যানারি ‍মালিকদের প্রকৃত উদ্দেশ্য জানতেই মন্ত্রীর এই নির্দেশনা। তবে মন্ত্রীর এই নির্দেশনার পর কাল (সোমবার) আমরা আমাদের অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে ট্যানারি মালিকদের নিয়ে বসছি, তখনই বিস্তারিত বলবো।
এ বিষয়ে সিইটিপি প্রকল্প পরিচালক যুগ্ম সচিব মো. আব্দুল কাইয়ুম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা স্যারকে বলেছি, সিইটিপিতে মেশিনারি যন্ত্রপাতি বসানো শুরু করেছি, ৩০ জানুয়ারি ট্রায়াল দেবো। এরপরই স্যার এই আলটিমেটাম দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ১৪/১৫টি ট্যানারি প্রাথমিক পর্যায়ে কাজ শুরু করে, আর কোন অগ্রগতি নেই, স্যার মূলত তাদের উদ্দেশ্যেই বলেছেন- নোটিশ দাও, এটাই হলো মোদ্দা কথা। অন্য যারা কাজ করছেন, তাদের কোন সমস্যা নেই। আসলে ১৪/১৫টি ট্যানারি মালিককে ২৬টি নোটিশ দিয়েও কাজ হয়নি, তাই স্যার বলেছেন আবারও নোটিশ দাও।
দেখা গেছে, অধিকাংশ ট্যানারি মালিক কাজই শুরু করেননি। আবার কেউ সীমানা প্রাচীর করেই বসে আছেন। তাছাড়া ট্যানারি শিল্প নগরী এলাকায় এখনো সার্ভিস রাস্তা, বিদ্যুৎ লাইন ও গ্যাসের লাইন পর্যাপ্ত করা হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email