শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই কেবল জিএসপি সুবিধাঃ বার্নিকাট

barnikut-2নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ ও অধিকার সম্পূর্ণ নিশ্চিত হলেই বাংলাদেশকে জিএসপি, ডিউটি ও কৌটা মুক্ত সুবিধা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া ব্লুম বার্নিকাট।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারে ডেইলি স্টার ও বিজিএমইএর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত “টার্গেট ৫০ বিলিয়ন ডলার: উই নিড ইয়োর সাপোর্ট টু রিচ ইট” শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনায় এ কথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, ৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানি লক্ষমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন দক্ষ শ্রমশক্তি, পরিবেশবান্ধব কারখানা, বিনিয়োগ বৃদ্ধি। এক্ষেত্রে আমেরিকা সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। তবে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের নিরাপত্তার ও স্বাস্থ্যের বিষয়কে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যথায় কোটা বা ডিউটি মুক্ত সুবিধা নিয়ে আলোচনার কোন পথ খুলবে না।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের গুণগত মান অত্যন্ত ভাল। এজন্যই ইউরোপ, আমেরিকা এ দেশের পণ্য কিনতে পছন্দ করে। সস্তা শ্রমের জন্য নয়। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো। এটা অর্জনযোগ্য লক্ষমাত্রা। কিন্তু রানা প্লাজা ও তাজরীন ফ্যাশনের মতো দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে নিশ্চয়তা দিতে হবে।

বার্নিকাট বলেন, গত দুই বছরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকখাতের অসাধারণ উন্নতি হয়েছে। তবে শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ ও অধিকার এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। তাদের ইউনিয়ন করার সুযোগ দিতে হবে।

পোশাক খাতের রফতানি লক্ষমাত্রা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশকে অনেক কিছুই করতে হবে। শুধু সস্তা শ্রমের জন্য পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের আজকের এই অবস্থান নয়। তবে পণ্যের উৎপাদনে খরচ বেড়ে গেলে কিভাবে সামঞ্জস্য করা হবে, সেটা উদ্যোক্তাদেরই ঠিক করতে হবে।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, একজনের কারণে সবারই দুর্নাম হয়। তাই কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সব ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিতে জোর দিতে হবে। ক্রেতারা উদ্যোক্তাদের পাশে থাকবেন। তবে ক্রেতাদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। এসব করা গেলে ডিউটি ফ্রি কৌটা ফ্রি সুবিধা নিয়েও হয়তো আলোচনা হতে পারে।

মূল প্রবন্ধে ড. শরীফ বলেন, ২০২১ সালে তৈরি পোশাক রফতানি ৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব। তবে এরজন্য কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এরমধ্যে প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বিনিয়োগ বাড়ানো, কারখানার স্থানান্তরে জমির সংস্থান, গ্যাসের যোগান দেয়া, জ্বালানি তেলের দাম কমানো, শ্রমিক ও কারখানার নিরাপত্তা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, টেকসই উন্নয়ন নীতিমালা, শ্রমিকদের দক্ষতা অর্জন, বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো এবং পণ্যের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ।

সর্বোপরি আমাদের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম, ভারত, মিয়ানমারসহ ইউরোপের অন্য চারটি দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি পোশাকের মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। এটা করতে না পারলে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে বলে মনে করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email