৮০০ কোটি টাকা লুটের তদন্তে মার্কিন ‘ফায়ারআই’ : নিয়োগ দিয়েছে ভারতীয় রাকেশের প্রতিষ্ঠান

FireEyeডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা চুরি যাওয়ার ঘটনা তদন্তে সহযোগিতা করছে যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা-বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ফায়ারআই ম্যান্ডিয়েন্টের ফরেনসিক বিভাগ। এ কাজের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স  বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে।
দুটি সূত্র জানিয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালি-ভিত্তিক ফায়ারআই বড় ধরনের বেশ কয়েকটি সাইবার চুরির ঘটনা তদন্ত করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির ঘটনা তদন্তে পরামর্শক হিসেবে কাজ করা ওয়ার্ল্ড ইনফরমেটিক্স তদন্তের সঙ্গে ফায়ারআইকে যুক্ত করেছে।
ওয়ার্ল্ড ইনফরমেটিক্স-এর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী রাকেশ আসথানা এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বিশ্বব্যাংকের সাবেক উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব সূত্রের ভাষ্য, রাকেশ আসথানাই এই তদন্তে সহযোগিতা করতে ফায়ারআইকে নিয়োগ করেছেন।
ওই দুই সূত্রের একজন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, নিউইয়র্কের রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ হ্যাকাররা কীভাবে চুরি করেছে, এ বিষয়ে তদন্ত কাজে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে মার্কিন সরকার।
ওই কর্মকর্তা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের বড় ধরনের এই চুরির ঘটনা তদন্তের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই) ও মার্কিন বিচার বিভাগের অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তা হয়েছে।

অর্থ চুরির প্রায় মাস খানেক পর প্রকাশিত এ ঘটনা সম্পর্কে এফবিআই, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা, বিচার বিভাগ ও রাজস্ব বিভাগের ক্রাইমস এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্ক মুখ খুলতে চায়নি।

এ ব্যাপারে নিউইয়র্কের রিজার্ভ ব্যাংকও তেমন কোনো তথ্য দেয়নি। তারা শুধু বলেছে, এ অর্থ চুরির ক্ষেত্রে তাদের ব্যবস্থাগত কোনো ত্রুটি ছিল না এবং তারা তদন্তের ব্যাপারে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

রয়টার্স বলছে, হ্যাকাররা কীভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেটওয়ার্কে ঢুকেছে, লুট হওয়া অর্থ কোথায় কোথায় গেছে এবং কোনো অর্থ উদ্ধার করা যাবে কি না—এসব প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত থেকে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে জানানো হয়, হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেমে ঢুকেই পেমেন্ট ট্রান্সফারের ক্রেডেনশিয়াল চুরি করে। এরপর ভুয়া সুইফট মেসেজের মাধ্যমে ফেডারেল রিজার্ভকে অর্থ স্থানান্তরের অনুরোধ পাঠানো হয়। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে এক সপ্তাহের মধ্যে এ রকম প্রায় তিন ডজন অনুরোধ যায় ফেডারেল রিজার্ভে। বিভিন্ন হিসাবে সব মিলিয়ে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার স্থানান্তর করতে বলা হয়। এর মধ্যে চারটি অনুরোধের বিপরীতে ফিলিপাইনের এক ব্যাংকের পাঁচটি হিসাবে মোট আট কোটি ১০ লাখ ডলার পাঠায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ। ভুল বানানে শ্রীলঙ্কার একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের হিসাবে দুই কোটি ডলার পাঠানোর পঞ্চম অনুরোধে সন্দেহ জাগলে অর্থ আর পাঠানো হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, তারা চুরি যাওয়া অর্থের কিছুটা উদ্ধার করতে পেরেছে। বাকি অর্থ উদ্ধার করতে ফিলিপাইনের অর্থ পাচার বিরোধী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে।

Print Friendly, PDF & Email