• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

‘ইতিহাস একদিন অবশ্যই এই রায়কে বিচার করবে’

72548_1আদালত প্রতিবেদক:  একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর কার্যনির্বাহী সদস্য মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপীল বিভাগের দেয়ার রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন এই রায়কে ইতিহাস একদিন বিচার করবে।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এই রায় দেন।

মীর কাসেমের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব বলেন, যেহেতু দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই রায় দিয়েছেন তাই তার কিছু বলার নেই। কিন্তু এই রায় একদিন ইতিহাস বিচার করবে।

আপিল বিভাগে শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি যেসব মন্তব্য করেছিলেন তারপরও এমন রায় হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে খন্দকার মাহবুব বলেন, যেহেতু সর্বোচ্চ আদালত রায় দিয়েছি তাই কিছু বলার নেই। তবে ইতিহাস একদিন অবশ্যই এই রায়কে বিচার করবে।

রায়কে পুনর্বিবেচনার জন্য রিভিউ আবেদন করবেন কীনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মাহবুব বলেন, রায়ের কপি হাতে পাবার পরই সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এসময় মীর কাসেম আলীর ছেলে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা লিখিত স্টেটমেন্ট দিব আপনারা পেয়ে যাবেন।

উল্লেখ্য এর আগে মামলা পরিচালনায় ব্যর্থতার কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

এসময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনায় খুবই মর্মাহত। মামলার এভিডেন্স দেখলে, এগুলো পড়লে আমাদের খুব কষ্ট লাগে। মামলাগুলো যখন আমরা পড়ি, তখন আমাদের গা ঘিনঘিন করে তাদের মামলা পরিচালনা দেখে। সব মামলায় এটা হয়ে আসছে।’

এরপর প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, ‘এত হাফ হার্টেড হয়ে আপনারা মামলা চালান কেন?’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রসিকিউশন, তদন্ত সংস্থার পেছনে রাষ্ট্রের লাখ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু তারা এসব কী মামলা পরিচালনা করছে? ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা শুধু ব্যস্ত টিভিতে চেহারা দেখানো নিয়ে। তারা দামি দামি গাড়ি চড়েন আর পুলিশের হুইসেল দিয়ে ঘুরে বেড়ান।’

এর আগে, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায়২০১৪ সালের ২ নভেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেমকে ফাঁসির আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর আপিল করেন মীর কাসেম। গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ওই আপিলের শুনানি শুরু হয়, শেষ হয় ২৪ ফেব্রুয়ারি। পরে রায় ঘোষণার জন্য ৮ মার্চ তারিখ ধার্য করেন আদালত।

২০১২ সালের ১৭ জুন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মীর কাসেমকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ২০১৩ সালের ১৬ মে রাষ্ট্রপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়।

Print Friendly, PDF & Email