• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

তিন বছরে ১১৫ জনের হদিস নেই, মিলেছে ৩২ লাশঃ ডয়চে ভেলে

DWনিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে গত তিন বছরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ১৮৮ জন অপহৃত বা নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন ‘আইন ও সালিশ কেন্দ্র’। আপহৃতদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ থেকেই তারা এ তালিকা তৈরি করে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র বা আসকের পরিচালক নূর খান বলেন, ‘আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ সব অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। এমনকি টাকার বিনিময়ে হত্যা বা ক্রসফায়ারের অভিযোগও আছে।’

আসকের হিসাব অনুযায়ী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে ২০১৩ সালে ৫৩ জন অপহৃত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পরে পাঁচজনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে, গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে পাঁচজনকে। এছাড়া আরো দু’জন উদ্ধার হয়েছেন। তবে ৪১ জনের কোনো খোঁজ আজও মেলেনি।

২০১৪ সালে একইভাবে অপহৃত হয়েছেন ৮৮ জন। তাদের মধ্যে ২৩ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে এবং ১১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এছাড়া উদ্ধার হয়েছেন ১২ জন আর ৪২ জনের কোনো হদিস নাই।

চলতি বছরে এ পর্যন্ত অপহৃত বা নিখোঁজ হয়েছেন ৪৭ জন। এদের মধ্যে ছয়জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, চারজন জীবিত উদ্ধার হয়েছেন আর পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকি ৩২ জন কোথায় আছেন কেউ জানে না।

অর্থাৎ গত তিন বছরে নিখোঁজ ১৮৮ জনের মধ্যে ১১৫ জনের এখানও কোনো হদিস নেই। আর যাদের পাওয়া গেছে, তাদের একটি বড় অংশ, ৩২ জনের লাশ পাওয়া গেছে।

আসকের পরিচালক নূর খান জানান, ‘অপহৃত বা নিখোঁজদের পরিবার অভিযোগ করেছেন যে তাদের র‌্যাব পুলিশ বা ডিবি সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে তাদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। আমরাও দেখেছি, এ সব অপহরণের বড় একটি অংশের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জড়িত। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় যদি লাশ ভেসে না উঠতো, তাহলে তাদেরও আর খোঁজ পাওয়া যেত না। এখন তো জানা যাচ্ছে যে, কতিপয় র‌্যাব সদস্য তাদের টাকার বিনিময়ে হত্যা করেছে। এ রকম টাকার বিনিময়ে আরো অপহরণ বা ক্রসফায়ারের অভিযোগও আমার পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সরকার বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা বারবার কথা বলেছি৷ কিন্তু তারা এ নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহ দেখায়নি। তাই বাধ্য হয়ে কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও অভিযোগ করেছেন।’

বিষয়টি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য জানা যায়নি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘অপহরণ-নিখোঁজের তদন্ত থেমে নেই। আমরাও চেষ্টা করছি তাদের খোঁজ জানতে।’
সূত্র: ডয়চে ভেলে

Print Friendly, PDF & Email