• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

দলের অনুমতি ছাড়াই তথ্য দিতে বাধ্য ইসি: হাইকোর্ট

ECআদালত প্রতিবেদক: রাজনৈতিক দলগুলোর অনুমতি ছাড়াই তাদের দলের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব দেশের যে কোনো নাগরিক চাইলে তা দিতে বাধ্য থাকবে বলে নির্বাচন কমিশনের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার হাইকার্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ড. শরীফ ভূইঁয়া ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন। তথ্য কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করীম। ইসির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম।

পরে ড. শরীফ ভূইঁয়া সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের এ রায় দেয়ার পর এখন নিবন্ধিত (রেজিস্ট্রেকৃত) রাজনৈতিক দলগুলোর বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশের ক্ষেত্রে দলগুলোর কোন ধরনের সম্মতির প্রয়োজন নেই।

এর আগে, ২০১৩ সালের ১২ জুন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার নির্বাচন কমিশনের কাছে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহের বছরভিত্তিক আয়-ব্যয়ের বিবরণী চেয়ে আবেদন করেছিলেন।

আবেদনের পর ইসি বদিউল আলম মজুমদারকে রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে তথ্য নিতে বলেন। পরে বদিউল আলম মজুমদার তথ্য কমিশনে আবেদন করেন। এ আবেদনের বিষয়ে বিভিন্ন আদেশ রায় এবং ইসির কাছে পুনরায় আবেদনসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে তথ্য কমিশন ২০১৪ সালের ১৬ জুলাই তৃতীয়পক্ষের (রাজনৈতিক দলের) মতামত ছাড়া হিসাব দেয়া যাবে না বলে রায় দেন।

এ আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান ও এএসএম শাহজাহান, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ,স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার।

হাইকোর্ট এ আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে রুল জারি করেছিলেন। বৃহস্পতিবার রুল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট আজ এই রায় দেন।

রায়ের পর সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, সাংবাদিকরাও এখন এ সুযোগ নিতে পারবেন। ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ২০১৩ সাল থেকে এ নিয়ে লড়েছি। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কাছে তথ্য প্রকাশের জন্য মতামত চেয়েছেন। ২১টি দল এতে সাড়া দিয়েছেন। কিন্তু ২১ দলের মধ্যে মাত্র ৩টি দল হিসাব প্রকাশ করতে অনাপত্তি দিয়েছে।

এখন আদালতের এ রায়ের মাধ্যমে হিসাব আর গোপন করার সুযোগ নেই। যে কোনো নাগরিক নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলের বার্ষিক হিসাব চেয়ে আবেদন করলে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলের সম্মতি ছাড়াই হিসাব দিতে বাধ্য থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email