‘আতাউস সামাদ ছিলেন বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত’

20170926_120508নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  বরেণ্য সাংবাদিক আতাউস সামাদ ছিলেন বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ, দুঃখ-দুর্দশার চিত্র তুলে ধরতেন নির্মোহভাবে। নিবেদিতপ্রাণ ও পরিশ্রমী সাংবাদিক ছিলেন তিনি ।

বিশিষ্ট এই সাংবাদিকের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তাদের অনেকেই এভাবে তাঁকে মূল্যায়ন করেন। সাংবাদিক আতাউস সামাদ স্মৃতি পরিষদ আজ (২৬ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার)  জাতীয় প্রেসক্লাবে ওই সভার আয়োজন করে।
আতাউস সামাদের প্রিয় দুই ছাত্র কবি হাসান হাফিজের সভাপতিত্বে ও শওকত মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন নিউজ টুডে সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমদ,  সাবেক প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ অবজারভার এর সাবেক নির্বাহী সম্পাদক আবদুর রহীম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে’র মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, এনটিভির বার্তা প্রধান খায়রুল আনোয়ার মুকুল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, প্রেসক্লাবের সাবেক সহসভাপতি কাজী রওনক হোসেন, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমা, নারী সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মমতাজ বিলকিস বানু, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।

রিয়াজ উদ্দিন আহমদ বলেন, আমি অবজারভারে যোগ দিয়ে আতাউস সামাদকে চীফ রিপোর্টার হিসেবে পেয়েছি। আমি তখন অনেকটা রচনার মত রিপোর্ট লিখতাম। সামাদ ভাই শিখিয়েছেন কিভাবে রিপোর্ট লিখতে হয়।
তিনি বলেন, এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে এ অঞ্চলে বিবিসির জনপ্রিয়তা আতাউস সামাদের বস্তুনিষ্ঠ রিপোর্টের কারণে। তার রিপোর্ট নিয়ে কখনো বিতর্ক হয়নি । সাংবাদিকতায় তিনি যে দৃষ্টান্ত ও অনুপ্রেরণা রেখে গেছেন তা তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে।

আবদুর রহিম বলেন, সত্ নিষ্ঠাবান ও নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিক ছিলেন । একাগ্র চিত্তে কাজ করতেন । কাজে কখনো ফাঁকি দিতেন না। রিপোর্ট জমা দিয়ে যাওয়ার পর খটকা লাগলে আবার অফিসে ছুটে আসতেন। তিনি সাড়া জাগানো বহু রিপোর্ট করেছেন ।
তিনি বলেন, মানুষ আতাউস সামাদের ব্যবহারে মুগ্ধ হতেন। তার সাথে কাজ করে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি । তার পথ অনুসরণ করতে পারলেই সম্মান জানানো হবে।
শওকত মাহমুদ বলেন,  আতাউস সামাদ খবরের পাগল ছিলেন। তাঁর সঙ্গে এক সফরে গিয়ে ফেরার সময় দেখেছি পথে পথে সংবাদের পেছনে ছুটেছেন। এনজিও ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় ঘর ভেঙে নিতে দেখে যাত্রা পথে তিনি ছয় ঘণ্টা সংবাদ সংগ্রহে কাটিয়েছেন।
তিনি বলেন, আতাউস সামাদ নিশ্চিত না হয়ে কোন খবর প্রকাশ বা প্রচার করতেন না। অথচ দুঃখজনক ঘটনা হচ্ছে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যুর দুই ঘণ্টা আগেই কোন কোন সংবাদ মাধ্যম মৃত্যু সংবাদ প্রচার করেছে।

এম আবদুল্লা বলেন, নিউজের সোর্সকে সবসময় প্রাধান্য দিতেন আতাউস সামাদ। নিশ্চিত না হয়ে কোনো খবর প্রকাশ করতেন না তিনি। গণতন্ত্রের জন্য জেলে যাওয়ার ঝুঁকি নিয়েছিলেন অকুতোভয় এই সাংবাদিক।  তার মৃত্যুতে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বেঁচে থাকলে আজ যে নতজানু সাংবাদিকতা চলছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদীভুমিকা নিতেন। গণমাধ্যমের এই দুর্দিনে তাঁর অভাব প্রচন্ড ভাবে অনুভূত হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email