রাজশাহীতে পুলিশের গাড়িতে আ’লীগের হামলা-ভাংচুর, রাবার বুলেট-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

0003নিজস্ব প্রতিনিধিঃ  রাজশাহীর নগরীর সিপাইপাড়া ফায়ার সার্ভিসের মোড়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় থার্টিফার্স্ট নাইটের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রাজশাহীতে আ’লীগের সঙ্গে পুলিশের  সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় আ’লীগের নেতাকর্মীরা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আতিকুর রহমান মিয়ার গাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায়. পুয়লিশ পাল্টা রাবার বুলেট-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

আহতরা হলেন- ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এনামুল, ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রনি, যুবলীগ নেতা ইদ্রিস এবং ছাত্রলীগ নেতা নাদিম, নাসিম, রকি, রাজু, সজল ও মাহফুজ। ছাত্রলীগ নেতা রনিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রাজশাহীর রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী জানান, থার্টিফার্স্ট নাইটে নগরীর কেশবপুর স্কুলের পাশে ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা পিকনিকের আয়োজন করেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজপাড়া থানার এসআই মাহবুবুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সেখানে যান এবং তাদের পিকনিক করতে নিষেধ করেন। এ সময় আওয়মী লীগ নেতারা শীঘ্রই পিকনিক শেষ করবেন বলে পুলিশকে জানালে তারা চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর এসআই মাহবুব আবারও সেখানে গিয়ে নয়জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।

তিনি আরও জানান, নেতাকর্মীদের আটকের খবর পেয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রী প্রসাদ রায় লিটন রাজপাড়া থানায় যান। সেখানে এসআই মাহবুব ও ওসি মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার সময় পুলিশ প্রথমে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। পরে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে হাজতে আটকে রাখে। রাতে খবর পেয়ে থানা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ রাত সাড়ে ৩টার দিকে রাজপাড়া থানায় গিয়ে হিমাদ্রীকে মুক্ত করেন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ে রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসআই মাহবুব ও ওসি মাহমুদুর রহমানের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে মিছিলটি নিয়ে তারা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দিকে রওনা দেন। মিছিলটি নগরীর সিপাইপাড়া ফায়ার সার্ভিসের মোড়ে পৌঁছলে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া পুলিশের একটি দল পেছন থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে আহত হন- এনামুল, ইদ্রিস, নাদিম, রনি, নাসিম, রকি, হিমাদ্রী, রাজু, সজল ও মাহফুজ। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বর্তমানে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অবস্থান করছেন।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বসা হচ্ছে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার একেএম নাহিদুল ইসলাম জানান, রাতে পিকনিকের নামে উচ্চৈঃস্বরে গান বাজাচ্ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশ নিষেধ করলেও তারা শোনেননি। পরে তাদের আটক করে থানায় আনা হয়। ওই ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যা ৬টার পর সিঅ্যান্ডবি মোড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে এক পুলিশ সদস্যের অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভ করেন এবং বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে তারা সিপাইপাড়া এলাকায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে আবারও তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান উপ-কমিশনার নাহিদুল ইসলাম।
এছাড়া সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আতিকুর রহমান মিয়ার গাড়িতে হামলা চালানো হয়। এতে গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তিনি রক্ষা পান বলেও জানান উপ-কমিশনার।

Print Friendly, PDF & Email