১৯ মার্চ বিএনপির কাউন্সিল, সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি

BNP-logoনিজস্ব প্রতিবেদকঃ আগামী ১৯শে মার্চ অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল। রাজধানীর সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যান ভেন্যু হিসেবে ব্যবহারের জন্য দলটিকে অনুমতি দিয়েছে গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ। তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-এর কাছ থেকে এখনও অনুমতি মিলেনি। দলটির দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, কাউন্সিলের প্রথমদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য উন্মুক্ত জায়গা প্রয়োজন। কিন্তু দ্বিতীয় দিনের কাউন্সিল অধিবেশনের জন্য প্রয়োজন ইনডোর অডিটরিয়াম। সেক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র ব্যবহার করতে চান তারা। গত ২৩শে জানুয়ারি বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষণা দেন, আগামী মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর পরপরই রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্র, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তন ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয় দলটি। নানামুখী প্রস্তুতিও শুরু করে তারা। ইতিমধ্যে কাউন্সিল সফলভাবে সম্পন্ন করতে প্রস্তুতি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য আমাদের বড় উন্মুক্ত জায়গা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি পেলে সেখানেই করবো। আর দ্বিতীয় দিনের কাউন্সিল অধিবেশনের জন্য ইনডোর অডিটরিয়াম প্রয়োজন। এর জন্য বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র কিংবা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনের আবেদন করেছি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের জন্য গণপূর্ত বিভাগ অনুমতি দিলেও প্রশাসনের তরফ থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। এতে কাউন্সিল প্রস্তুতিতে কিছুটা বিঘ্ন হচ্ছে। তবে আশা করছি সরকার আমাদের অনুমতি দেবে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ৮ই ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির সর্বশেষ পঞ্চম কাউন্সিল হয়েছিল। তিন বছর পর পর কাউন্সিল অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কাউন্সিল করতে পারেনি দলটি। ফলে দীর্ঘ ছয় বছরের বেশি সময় পর দলটির ষষ্ঠ কাউন্সিল হতে যাচ্ছে।
এদিকে গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহমেদ বলেন, আমরা ১৯শে মার্চ কাউন্সিল অনুষ্ঠানের জন্য তিনটি জায়গার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি। এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জন্য গণপূর্ত কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছিল। তার জবাব পেয়েছি। তারা বলেছে, তাদের দিতে আপত্তি নেই, এটা এখন পুলিশের অনুমোদনের বিষয়। ডিএমপিতে এ বিষয়ে চিঠি দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত জবাব পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে বিরোধী দল নির্মূল করার অভিযানে লেলিয়ে দিয়ে তাদের বুকের মাপটা বড় করে দেয়া হয়েছে। গত কয়েক বছর বিচারবহির্ভূত হত্যা, বেআইনি গুম ও গুপ্তহত্যার ছাড়পত্র দিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। ফলে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর র‌্যাব-পুলিশ এখন সাধারণ মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করছে। চাঁদাবাজি, জুলুম, প্রহার, নিরীহ মানুষকে আটক করে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে মামলা দেয়া বা ভয় দেখানো, ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, আদায় না হলে হত্যা করা ইত্যাদি পৈশাচিক অপকর্মে লিপ্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যরা। তিনি বলেন, সম্প্রতি মিরপুরের ১নং গুদারাঘাট এলাকায় চা দোকানি বাবুল মাতব্বরের কাছে চাঁদার টাকা না পেয়ে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দগ্ধ করে পুলিশ। গুরুতর দগ্ধ বাবুল মাতব্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে মারা যান। এই হত্যার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান রিজভী আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, সহদপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email