• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

মহিউদ্দিনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা, বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতিকারী লতিফের পক্ষে সাত এমপির বিবৃতি

0-2চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিকৃতি করে নিজের ফেস্টুন তৈরির দায়ে সমালোচিত ও একাধিক মামলার আসামি সরকার দলীয় সাংসদ এম এ লতিফের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন চট্টগ্রামের সরকার দলীয় সাত সাংসদ। গণমাধ্যমে যৌথ বিবৃতি পাঠিয়ে এই সাত সাংসদ নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দাও জানিয়েছেন।

বিবৃতিদাতারা হলেন, চট্টগ্রাম ১০ আসনের সংসদ সদস্য ও নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ডা. আফছারুল আমীন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-০৬), শামসুল হক চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১২), মো.নজরুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৪), মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৬), দিদারুল আলম (চট্টগ্রাম-০৪) ও মাহফুজুর রহমান (চট্টগ্রাম-০৩)।

বিবৃতির সত্যতাটি বাংলমেইলকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম ১০ আসনের সংসদ সদস্য ও নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ডা. আফছারুল আমীন। বুধবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো যৌথ এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘গত ১৫ ফেব্রুয়ারি লালদিঘী মাঠে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে দুইবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এমএ লতিফের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিকৃতির মিথ্যা অভিযোগ এনে নাগরিক মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী যে বক্তব্য দিয়েছেন আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ছবি বিকৃতির আত্মস্বীকৃত ডিজাইনারের বিরুদ্ধে অবস্থান না নিয়ে এমএ লতিফের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও তাকে সামাজিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বক্তব্য কোনভাবেই একজন দায়িত্বশীল নেতার আচরণ হতে পারে না।’

গত মাসের ৩০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চট্টগ্রাম সফরের সময় বন্দর-পতেঙ্গা আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফের নামে লাগানো ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির ঘটনা গণমাধ্যমে উঠে আসার পর মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন চট্টগ্রামের আওয়ামী পরিবারের বিশাল একটি অংশ। এঘটনায় সাংসদ লতিফের বিরদ্ধে চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহ ও দুটি মানহানির এবং একটি তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত বাংলামেইলের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ‘এমপি লতিফের তদারকিতেই সেই ফেস্টুন’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের প্রেক্ষিতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি একদিনের মাথায় লতিফের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রত্যাহার করে নিয়ে ছবি বিকৃতির সব দায় দিয়েছিলেন চেম্বার কর্মকর্তা ও ডিজাইনারের ওপর।

এরপরও গত ১৫ ফেব্রুয়ারি লালদীঘির মাঠে আয়োজিত এক সমাবেশে মহিউদ্দিন চৌধুরী বঙ্গবন্ধুকে অবমাননায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘ জাতির জনকের ছবি বিকৃতির মাধ্যমে লতিফ যে মহা অন্যায় করেছে, সেকারণে চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অনুসারীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেটি আইনগতভাবে নিষ্পত্তি হবে। তবে জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে যদি সে (লতিফ) হামলার শিকার হয়। জনগণের হামলায় সে মারাও যেতে পারে। এজন্য আমাকে যদি হুকুমের আসামি করা হয় এবং সেই আসামি হিসেবে কাটগড়ায়ও যেতে মহিউদ্দিন চৌধুরী রাজি আছে। তবু এই কুলাঙ্গার লতিফকে চট্টগ্রামের মাটিতে নামতে দেয়া হবে না। তাকে এই লালদীঘির মাঠে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম।’

মহিউদ্দিনের ওই হুঁশিয়ারির দুই দিনের মধ্যে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্যরা চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি এমপি হওয়া লতিফের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘মহিউদ্দিন চৌধুরী দলীয় শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, যা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত এবং দেশের প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের সমতুল্য। কোনো সভ্য মানুষের পক্ষে এহেন মন্তব্য অসম্ভব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুকন্যা ও সংসদনেত্রী ও দলীয় প্রধান উনার কাছে অভিযোগ না করে লালদীঘি মাঠে প্রতিবাদ সভার আয়োজন এবং এতে কুরুচিপূর্ণ ও ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য দেওয়া সরাসরি দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি, রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ ও পাগলের প্রলাপ।’

Print Friendly, PDF & Email