অঘটন দেখে সতর্ক বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শেষ ম্যাচে দেখলাম নিউজিল্যান্ড নেপালের সঙ্গে হারলো। তাই কোনো দলকেই ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই।’- নিউজিল্যান্ডের হার দেখে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ব্যাটসম্যান পিনাক ঘোষ যখন নিজেদের সতর্ক হওয়ার কথা বলছিলেন, ঠিক তখনই পাশের মাঠে স্কটল্যান্ড নামিবিয়ার বিপক্ষে মাত্র ১৫৯ রানে গুটিয়ে যায়। তারপর ঘটে যায় আরও এক অঘটন। স্কটল্যান্ড হেরে যায় ৯ উইকেটে বিশাল ব্যবধানে। বলা হচ্ছিল বাংলাদেশের গ্রুপে থাকা দলগুলোর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার পরই স্কটল্যান্ড। কিন্তু তাদেরও এই ভাবে হেরে যাওয়া আসলেই বাংলাদেশের জন্য সতর্ক সংকেতও। যে কারণে মিরাজ বাহিনী আরও সাবধানী হয়ে কাল মাঠে নামবে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। এমনকি ভীষণ ভাবেই সতর্ক থাকতে হবে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ নামিবিয়ার বিপক্ষেও। দেশের মাটিতে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখছে যুব ক্রিকেটাররা। এমনকি চ্যাম্পিয়ন হতেও চায় তারা। এরই মধ্যে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বড় জয় দিয়ে শুরু করেছে টাইগাররা। বাকি দুটি ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত। কিন্তুপিনাক ঘোষ এখনই সে কথা ভাবতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘যখন পর্যন্ত ম্যাচ বাই ম্যাচ আমরা না জিতবো তখন পর্যন্ত ওটা (কোয়ার্টার ফাইনাল) নিয়ে ভাববো না। সামনে স্কটল্যান্ড, ওটা নিয়ে চিন্তা করছি এখন। এরপর নামিবিয়া নিয়ে চিন্তা করবো। ম্যাচ বাই ম্যাচ পার করলে আমরা কোয়ার্টার ফাইনাল নিয়ে চিন্তা করবো।’
চট্টগ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার সাগর কন্যা কক্সবাজারে আসে মেহেদি হাসান মিরাজ বাহিনী। সেদিন ফুরফুরে মেজাজে সারাদিনই কেটেছে হোটেলের লবি ও রুমে। গতকাল সকাল ৯টায় আসে কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বেলা ১২টা পর্যন্ত ঘাম ঝরায় অনুশীলনে। প্রথম ম্যাচে জিতলেও ক্যাচ ছেড়ে কিছুটা ভুগতে হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে। তাই দলের অস্ট্রেলীয় পরামর্শক স্টুয়ার্ট ল’ নিজেই মাঠে নেমে পড়েছেন শিষ্যদের ফিল্ডিং অনুশীলন করাতে। দীর্ঘক্ষণ ক্যাচ প্র্যাকটিস করার পর মন দেয়া হয় ব্যাটিং নিয়ে। প্রথম ম্যাচে পিনাক ঘোষ ৭ ও জয়রাজ শেখ ইমন চার রানের জন্য ফিফটি বঞ্চিত হন। পিনাক তাড়াহুড়া করে রান আউট আর ইমন দ্রুত রান তুলতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন। তাই এই ভুল যেন আর না হয় সেটাও বোঝালেন কোচ। দীর্ঘক্ষণ চললো ব্যাটিং অনুশীলনটা। বাংলাদেশ দলের মূল শক্তি স্পিন। কিন্তু দলের অন্যতম স্পিনার সঞ্জিত সাহার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে আইসিসির সন্দেহের তালিকায় আসায় তার খেলা নিয়েও আছে কিছুটা শঙ্কা। আইসিসির বিশেষজ্ঞ প্যানেল তার বোলিং অ্যাকশন দেখে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে। তাই তার শেষ দুই ম্যাচে খেলা এখনও নিশ্চিত নয়। যে কারণে বোলিং অনুশীলনটাও বেশ ভালভাবে সেরে নেয় দল। কোনো অবস্থাতেই আত্মতুষ্টিতে ভুগতে চাইছে না দল।
আত্মতুষ্টিতে না ভুগলেও নিজেদের উপর দারুণ বিশ্বাস দলের প্রত্যেক তরুণের। তারা বেশ ভালভাবেই জানেন নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে পারলে যুব বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ১৬টি দলকেই হারানো সম্ভব। এমনকি ভারত-পাকিস্তানকেও। এ বিশ্বকাপের কোন দল বাংলাদেশের কঠিন প্রতিপক্ষ হতে পারে তা নিয়ে পিনাক ঘোষ বলেন, ‘কঠিন প্রতিপক্ষ বলতে তেমন কিছু দেখছি না। আমরা যদি আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলি, যে রকম সবাই খেলছে কোনো দলই আহামরি না। দেখছি ভারত ও পাকিস্তানের দলটি ভালো আছে। তবে আহামরি কিছু না। আমরা নিজেদের খেলাটা ভালো করে খেলতে পারি তাহলে কোনো দলই আমাদের কাছে কঠিন প্রতিপক্ষ হবে না।’
অন্যদিকে কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটটা একটু কোনাকুনি। যে কারণে মাঠে ফিল্ডিং সেট করাতে একটু সমস্যায় পড়তে হয় অধিনায়কদের। এ ছাড়াও চারপাশ খোলা থাকায় বাতাসও একটু প্রভাব ফেলে বোলিংয়ে। কিন্তু এ স্টেডিয়ামে সব দলের চেয়েই এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। শুধু নিজ দেশের মাঠ বলেই নয়, এখানে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছে অনূর্ধ্ব-১৯ দল। দলের সহকারী কোচ মো. সোহেল বলেন, ‘আসলে এখানে আমাদের দলের ক্রিকেটারদের তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। উইকেট ও মাঠ নিয়ে তারা বেশ ভালভাবেই অবগত আছে। মাঠ একটু কোনাকুনি হলেও এতে কোনো সমস্যা হবে না। আর আমি যত দিন ধরে দেখছি মনে হয় না অনেক বেশি বাতাস ছাড়া কোনো সমস্যা হয় না। আমাদের এখানে একটা ক্যাম্প করা হয়েছিল ৮ দিনের। এ ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেসহ বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি উইকেট ও মাঠ কোনো সমস্যা হবে না।’