ছাত্র বেতন ত্রিশ শতাংশ বাড়ানো যাবে

MPO-tution-fee-09.08.16নিজস্ব প্রতিবেদক:  অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা) অনুমোদন নিয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বেতন বাড়ানো যাবে, তবে তা ৩০ শতাংশের বেশি হবে না।

মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক পরিপত্রে এ কথা জানানো হয়েছে। নতুন বেতন স্কেল চালুর প্রেক্ষাপটে বেসরকারি এমপিওভুক্ত, আংশিক এমপিওভুক্ত এবং এমপিওবিহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি) বেতন ও টিউশন ফি বৃদ্ধির বিষয়ে এ পরিপত্র জারি করা হয়েছে।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ ও নন-এমপিও শিক্ষকদের বেতন-ভাতা নির্ধারণের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পরিপত্রে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সক্ষমতা বিবেচনায় নিতে হবে। তবে কোন অবস্থাতেই ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশেরর বেশি বাড়ানো যাবে না। তাছাড়া সংস্থাপন ব্যয় বাবদ ভর্তি নীতিমালায় বর্ণিত সেশনচার্জ ও উন্নয়ন ফি’র অতিরিক্ত কোন অর্থ আদায় করা যাবে না।

শুধু ঘাটতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো ঘাটতি মেটাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ ভর্তি ফি ও টিউশন ফি বৃদ্ধির মাধ্যমে নিতে পারবে। অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক ফি বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সুপারিশসহ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে দেবেন বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, প্রস্তাবটি পরীক্ষা করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার যথাযথ মনে হলে তা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা) কাছে উপস্থাপন করবেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) অনুমোদন করলে বিদ্যালয় ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

অভিভাবকরা বলছেন, এ পরিপত্রের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের বেতন ও ফি বৃদ্ধির বিষয়টিকে বৈধতা দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকারের দুর্বল তদারকির জন্য পরিপত্রের সুযোগ নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা আরও বাড়বে।

গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট জারি করে সরকার। গত বছরের জুলাই থেকেই নতুন পে-স্কেল কার্যকর হয়। একই সময় থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরাও নতুন বেতন কাঠামোর সুবিধা পায়। এ প্রেক্ষাপটে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের বেতন, টিউশন ফি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।

পরিপত্রে বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন পে-স্কেল চালুর পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি এমপিওভুক্ত, আংশিক এমপিওভুক্ত এবং এমপিওবিহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অস্বাভাবিক বেতন ও টিউশন ফি বৃদ্ধি করে যাচ্ছে, যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

শিক্ষক নিয়োগ ও বেতন নির্ধারণে নির্দেশনা

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা জনবল কাঠামো অনুসারে নির্ধারণ করতে হবে জানিয়ে পরিপত্রে বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোন শ্রেণি শাখা বৃদ্ধি করা যাবে না। শ্রেণি শাখার অনুমোদন না থাকলে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ বৈধ হবে না। অনুমোদন ছাড়া নিয়োগ করা শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন বেতন বা ফি আদায় করা যাবে না।

এতে বলা হয়, শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ভাতা জনবল কাঠামোতে নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হবে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সরকারি বেতন ভাতার অংশের বাইরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাড়তি ভাতা দিতে চাইলে তার পরিমাণ এমনভাবে নির্ধারিত হবে যেন, একজন শিক্ষকের মোট প্রাপ্তি কোনভাবেই একই স্কেলভুক্ত সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকের মোট প্রাপ্তির বেশি না হয়।

পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, একজন নন-এমপিও শিক্ষকের বেতন ভাতার মোট পরিমাণ কোনভাবেই সমস্কেলের একজন এমপিওভুক্ত শিক্ষকের বেতনের চেয়ে বেশি হবে না।

Print Friendly, PDF & Email