স্কুলকেন্দ্রীক ছাত্রলীগের গ্রুপিংয়ের শিকার চট্টগ্রামে নিহত আদনান

আদনাননিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে স্কুলকেন্দ্রিক ছাত্রলীগের রাজনীতি ও গ্রুপিংয়ের বলি হয়েছে স্কুলছাত্র আদনান ইসফার। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের পর তা যাচাই করে মাঈন উদ্দিন নামে একজনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। নগরীর সরকারি স্কুলগুলোতে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছে কলেজছাত্র মাঈন। সিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, আদনান হত্যায় নেতৃত্ব দেয়া মাঈনকে গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, কলেজিয়েট স্কুল, চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (গভ. হাই), সরকারি মুসলিম হাই স্কুল, নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপ রয়েছে। স্কুল ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন চন্দনপুরা এলাকার আবদুর রউফ নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা। রউফের প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন জামালখান এলাকার ছাত্রলীগ নেতা শাব্বির আহমদ। অভিযোগ করে তারা বলেন, ছাত্রলীগ নামধারী স্কুলের ছাত্ররা শিক্ষকদের কথা শোনে না। স্কুল ক্যাম্পাস এবং ক্যাম্পাসের বাইরে মারামারি ও সংঘাতে লিপ্ত হয়। স্কুলে এ ধরনের নোংরা ও সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা।

আদনানের একাধিক বন্ধু যুগান্তরকে জানায়, গ্রুপিংয়ের কারণে আদনানের প্রাণ গেছে। নবম শ্রেণীর ছাত্র হলেও মাঝেমধ্যে সে ছাত্রলীগের মিছিলে যেত। জামালখান এলাকার শাব্বিরের অনুসারী ছিল আদনান। তাদের বাড়িও পাশাপাশি। চন্দনপুরা এলাকার ছাত্রলীগ নেতা সাব্বিরের সঙ্গে জামালখান এলাকার শাব্বিরের দ্বন্দ্ব রয়েছে। কিছুদিন আগে চন্দনপুরার সাব্বিরের এক অনুসারীকে মারধর করে জামালখানের শাব্বিরের অনুসারী বাপ্পি। এ ঘটনার জের ধরে চন্দনপুরার সাব্বিরের অনুসারী মাঈনসহ কয়েকজন আদনানকে খুন করেছে। আদনানের বন্ধু শোয়াইব জানান, তাদের বাসা গণি বেকারির পশ্চিম গলিতে। মহসিন স্কুলের মাঠে মাঝে মাঝে তারা ফুটবল খেলে।

স্থানীয় লোকজন জানান, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত চন্দনপুরার সাব্বিরের গডফাদার রউফের বিরুদ্ধে খুন ও চাঁদাবাজির একাধিক মামলা রয়েছে। জামাল খান এলাকায় ‘মেজ্জান হাইলে আইয়্যু’ নামের একটি রেস্তোরাঁয় বসে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে রউফের অনুসারীরা। ওই রেস্তোরাঁর ২০ গজের মধ্যে মঙ্গলবার আদনান খুনের ঘটনাটি ঘটে।

অভিভাবক রেজা মুহাম্মদ খান যুগান্তরকে জানান, তার ছেলেও গ্রুপিংয়ে জড়িয়ে পড়েছিল। এজন্য তাকে ৩ মাস বাসায় আটকে রেখেছিলাম। স্কুল ছাত্র রাজনীতির নামে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়া, সংঘাতে প্রশ্রয় দেয়া শিক্ষা ব্যবস্থায় মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। এর পরিণতি খুব খারাপ হবে।

চকবাজার থানার ওসি নুরুল হুদা যুগান্তরকে জানান, খুনের পরপরই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এটি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আদনানের মূল ঘাতক মাঈন উদ্দিন। তার সহযোগী ছিল কয়েকজন।

Print Friendly, PDF & Email