• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

ঋণখেলাপি মামলায় খালেদা-তারেকসহ ১৪ জনের বিচার শুরু

Khaleda-1নিজস্ব প্রতিবেদক : ড্যান্ডি ডায়িংয়ের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের দায়ের করা ৪৫ কোটি টাকার ঋণখেলাপি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১৪ বিবাদীর বিরুদ্ধে ইস্যু গঠন করেছেন আদালত। দেওয়ানি এ মামলায় ইস্যু গঠন হওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিচারকাজ শুরু হলো।
ঢাকার অর্থঋণ আদালত-১ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফাতেমা ফেরদৌস মঙ্গলবার এ মামলার ইস্যু গঠন করে সাক্ষীর জন্য ১ মার্চ দিন ধার্য করেছেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম মঙ্গলবার ইস্যু গঠন শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। একই সঙ্গে তিনি খালেদা জিয়ার নাম কর্তণের জন্যও আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে ইস্যু গঠন শুনানির আদেশ দেন।

ব্যারিস্টার ফকরুল ইসলাম আদালতকে বলেন, ‘এ মামলা আইনগতভাবে চলতে পারে না। ইস্যু গঠনের জন্য এ মামলার কোনো ভিত্তি নেই।’
অপরদিকে, সোনালী ব্যাংকের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম আদালতকে বলেন, ‘এ মামলা যথাযথ আইনিপ্রক্রিয়া মেনেই দায়ের করা হয়েছে। কাজেই ইস্যু গঠন করা হোক।’ আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে মামলার ইস্যু গঠন করেন।

২০১৫ সালের ১৪ জুলাই খালেদা জিয়ার পক্ষে সমনের জবাব দাখিল করেন আইনজীবী মাসুদ আহম্মদ তালুকদার ও জয়নাল আবেদীন মেজবাহ।
জবাবে বলা হয়, সোনালী ব্যাংক থেকে কোম্পানি ১৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ঋণ নেয়। পরে ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করে। অথচ সোনালী ব্যাংক নিয়মবহির্ভূত ও বেআইনিভাবে ৪৫ কোটি টাকা ঋণখেলাপির মামলাটি করেছে, যা অর্থঋণ আইনে বৈধ নয়।

এদিকে, আরাফাত রহমান কোকো নামমাত্র কোম্পানির ডিরেক্টর ছিলেন। তিনি লেনদেনের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত ছিলেন না। তাই মামলাটি খারিজের আবেদন করেন খালেদা জিয়া। খালেদার পক্ষে হলফনামা দেন মাহবুব আল আমিন।

২০১৫ সালের ১৬ মার্চ খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন আদালত। সমন জারির পর জবাব দিতে বলা হয় তাকে।
আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ায় ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক অংশীদারিত্ব মামলায় তার মা খালেদা জিয়া, স্ত্রী শার্মিলা রহমান এবং দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানকে বিবাদী করার জন্য ২০১৫ সালের ৮ মার্চ আদালতে আবেদন করে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ ঢাকার অর্থঋণ আদালত-১ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক রোকসান আরা হ্যাপী এ মামলায় তাদের বিবাদী করেন।
ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি আরাফাত রহমান কোকো হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে মারা যান।

এ মামলায় অন্য বিবাদীরা হলেন— বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তার মামা প্রয়াত সাঈদ ইস্কান্দারের ছেলে শামস ইস্কান্দার ও সাফিন ইস্কান্দার, মেয়ে সুমাইয়া ইস্কান্দার ও স্ত্রী বেগম নাসরিন আহমেদ, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন (অন্য মামলায় বর্তমানে কারাগারে), মামুনের স্ত্রী শাহীনা ইয়াসমিন, কাজী গালিব আহমেদ, মিসেস শামসুন নাহার ও মাসুদ হাসান।

মামলার এজাহারে জানা যায়, ১৯৯৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিবাদীরা ড্যান্ডি ডায়িংয়ের অনুকূলে সোনালী ব্যাংকে ঋণের জন্য আবেদন করেন। ওই বছরের ৯ মে সোনালী ব্যাংক ঋণ মঞ্জুর করে।

২০০১ সালের ১৬ অক্টোবর বিবাদীদের আবেদনক্রমে ব্যাংকের পরিচালনাপর্ষদ তাদের সুদ মওকুফ করে। পরবর্তীতে বিবাদীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক আবারও ঋণ পুনঃতফসিলীকরণ করে দেয়। কিন্তু বিবাদীরা ঋণ পরিশোধ না করে বারবার কালক্ষেপণ করতে থাকেন।

২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধের জন্য বিবাদীদের চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হলেও তারা কোনো ঋণ পরিশোধ করেননি।
ফলে ৪৫ কোটি ৫৯ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৫ টাকা ঋণখেলাপির অভিযোগে ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর ঢাকার প্রথম অর্থঋণ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।

Print Friendly, PDF & Email