চাঁপাই ও যশোরে পুলিশ-র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিনজন নিহত

Crossfaire-3নিজস্ব প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও যশোরে পুলিশ-র‌্যাবের ক্রসফায়ারে তিনজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে চাপাইয়ের সদর উপজেলায় র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তোফায়েল আহমেদ মিলন (২৮) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার চক আলমপুর গ্রামে এই বন্দুকযুদ্ধ হয়।

র‌্যাবের দাবি, নিহত মিলন এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ঘটনায় আটটি মামলা রয়েছে। তবে নিহত মিলনের পরিবারের দাবি, তিনি ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। দুই সপ্তাহ আগে ঢাকা থেকে র‌্যাব তাকে ধরে এনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে হত্যা করেছে।
নিহত রাজমিস্ত্রি মিলন সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুরের আব্দুস সালামের ছেলে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‌্যাব-৫ এর ক্যাম্প কমান্ডার মোদাচ্ছের রহিম বলেন, সদর উপজেলার চক আলমপুর গ্রামে মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে নিয়মিত টহলে যায় র‌্যাবের একটি দল।

গ্রামের একটি আম বাগানের কাছে গেলে র‌্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। পরে আম বাগান থেকে মিলনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।

ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি রিভলবার, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও চারটি ককটেল উদ্ধার করার দাবি করেন র‌্যাব কর্মকর্তা মোদাচ্ছের রহিম।
তিনি বলেন, নিহত মিলনের বিরুদ্ধ সদর থানায় আটটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলা রয়েছে।

সদর থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম জানান, র‌্যাবের কাছ থেকে খবর পেয়ে সকাল ছয়টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত মিলনের মা ফিরোজা বেগম বলেন, ‘তার ছেলে ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতো। গত ১৯ নভেম্বর তাকে ঢাকার কাজীপাড়া থেকে র‌্যাব ধরে নিয়ে আসে।’
মিলন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল না বলেও দাবি করেন তিনি।

যশোরে বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহত: যশোরের অভয়নগর দুটি সন্ত্রাসী গ্রুপর মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় বিদ্যুৎ কুমার রায় নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোররাতের দিকে অভয়নগরের রানাগাতি শ্মশান ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান ও তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন ঘটনাটি সাজানো। অভয়নগর থানার ওসি শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, নিহত বিদ্যুৎ অভয়নগর এলাকার চরমপন্থী গ্রুপ তুরা-নসো বাহিনীর প্রধান। তার বিরুদ্ধে হত্যা, বিস্ফোরকসহ মোট ৯টি মামলা রয়েছে। ওসি বলেন, ভোর রাতের দিকে স্থানীয় জিয়া বাহিনীর সাথে তুরা-নসো বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধ শুরু হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তুরা-নসো বাহিনীর প্রধান বিদ্যুৎকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান ও গুলির তিনটি খোসা উদ্ধার করে।
এদিকে, যশোরে কথিত বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাত পরিচয় একজন নিহত হয়েছেন। পুলিশ দাবি করছে নিহত ব্যক্তি ডাকাত দলের সদস্য। মঙ্গলবার গভীর রাতে সদর উপজেলার যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের রহমতপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আবুল খায়ের জানান, যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের রহমতপুর এলাকায় একদল লোক ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গোপন খবরের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালালে সেখানে ডাকাত দল পুলিশের দিকে গুলি ছোড়ে। এসময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে আনুমানিক ৩০ বছর এক যুবক নিহত হয়। তবে তার নাম জানা যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি বড় দা, গাছ কাটার করাত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান এসআই খায়ের। তিনি বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের এসআই তোফায়েল আহমেদ, কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম ও রাসেল আহত হয়েছেন। তাদের যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email