সংঘর্ষে কিশোরগঞ্জ, বরগুনা ও লোহাগড়ায় ৩ জনের মৃত্যু

02কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর পৌরসভায় জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত আবুল কাশেম (৪৫) মারা গেছেন। নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভা নির্বাচনের প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘষে আহত আওয়ামী লীগ নেতা মারা গেছেন। বরগুনা পৌরসভা নির্বাচনে গগণ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সংঘর্ষের সময় পদদলনে আহত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল ভোটগ্রহণ চলাকালে বিকাল ৩টার দিকে হোসেনপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শাহজাহান আলম কাজল ও জহিরুল ইসলাম ওয়াসিমের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আবুল কাশেম গুরুতর আহত হন। পরে রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

আবুল কাশেম দক্ষিণ ধুলিহর গ্রামের আফির উদ্দিন বেপারির ছেলে। এদিকে আবুল কাশেমের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আজ সকাল থেকে দু’পক্ষ ফের সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দুই দিনের ধারাবাহিক এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া হামলা হয়েছে দোকানপাট ও বাড়িঘরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

হোসেনপুর ওসি নান্নু মোল্লা জানিয়েছেন, আজ ভাঙচুরের ঘটনায় আরিফ  নামে শাহজাহান আলম কাজলের পক্ষের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। আটক আরিফ দক্ষিণ ধুলিহর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন পক্ষই মামলা করেনি বলে ওসি জানান। এদিকে নির্বাচনে ৬৯৯ ভোট পেয়ে শাহজাহান আলম কাজল বেসরকারিভাবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জহিরুল ইসলাম ওয়াসিম পেয়েছেন ৫২০ ভোট।

লোহাগড়ায় সংঘর্ষে আহত আ’লীগ নেতার মৃত্যুঃ
নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভা নির্বাচনের প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘষে আহত আওয়ামী লীগ নেতা মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নীবিড় পর্যবেক্ষনে থাকা অবস্থায় তার তার মৃত্যু হয়। নিহত ওই আওয়ামী লীগ নেতা বাচ্চু মোল্যা (৫০) লোহাগড়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের জয়পুর গ্রামের আব্দুল আজিজ মোল্যার ছেলে ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক। তিনি অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ছিলেন।

বরগুনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যুঃ
বরগুনা পৌরসভা নির্বাচনে গগণ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সংঘর্ষের সময় পদদলনে আহত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহতের নাম মো. নূরুল ইসলাম (৬৫)। তিনি বরগুনা জেলার ধূপদী গ্রামের বাসিন্দা। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. কামরুল ইসলাম জানান, নির্বাচনী সংঘর্ষে বুধবার নুরুল ইসলাম আহত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার ১২ টায় তার মৃত্যু হয়। তবে বার্ধক্যজনিত সমস্যার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে কিনা তা ময়নাতদন্ত শেষে জানা যাবে। প্রসঙ্গত, বুধবার সকাল ৯ টার দিকে জেলার সদর পৌরসভার গগন মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে কেন্দ্র দখল নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১০ রাউন্ড গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করলে অন্তত শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। এ সময় ভোটাররা আতঙ্কিত হয়ে ছুটাছুটি করলে শিশুসহ অনেকে পদদলিত হয়ে গুরুতর আহত হয়।

Print Friendly, PDF & Email