• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

নকল করতে না দেয়ায় শিক্ষককে পেটালো ছাত্রলীগ নেতা

BCL-logoনিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালে সম্মান প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় নকলে বাধা দেওয়ায় কক্ষ পরিদর্শক শিক্ষককে মারধর করেছেন সরকারি বরিশাল কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আল-মামুন। বুধবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সরকারি বরিশাল কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

এর প্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ জরুরী বৈঠক করে আল-মামুনের ছাত্রত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে মহানগর ছাত্রলীগ বরিশাল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সকল কার্যক্রম স্থগিত করেছে।

কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অলিউল ইসলাম জানান, সম্মান প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় ৩১০ নম্বর কক্ষে পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করছিলেন উজিরপুর উপজেলার শহীদ স্বরনিকা কলেজের প্রভাষক কাজী নজরুল ইসলাম। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে বিকেল পৌনে ৫টায় এক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে নকল উদ্ধার হলে তার উত্তরপত্র নিয়ে যান প্রভাষক নজরুল ইসলাম। কিছুক্ষণ পরে তিনি আবার উত্তরপত্র ফেরত দেন।

এ খবর পেয়ে কলেজে ছুটে যান ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আল-মামুন। তিনি পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র টেনে নেওয়ার জন্য শিক্ষক কাজী নজরুল ইসলামকে প্রকাশ্যে কয়েকটি থাপ্পর দেন। এসময় কলেজের সকল শিক্ষকরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। সন্ধ্যা ৬টায় কলেজের স্টাফ কাউন্সিলের জরুরী সভা করে আল-মামুনের ছাত্রত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অভিযুক্ত কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আল-মামুন শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বহিরাগতরা এ কাজ করেছে। তিনি ঘটনার সময় কলেজে ছিলেন না।

মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিমউদ্দিন জানান, কলেজ শাখার সভাপতি আল-মামুনের বিরুদ্ধে শিক্ষকরা অভিযোগ করায় বরিশাল কলেজে ছাত্রলীগের সকল কার্যাক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ান জানান, দলে উশৃঙ্খলকারীদের ঠাঁই নেই। আগামীতে দলের কারো বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উঠলে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে এ ঘটনার আগে আজ বেলা ১১টার দিকে বিতর্ক সংগঠন ডিবেটিং সোসাইটির (বিডিএস) সভাপতি এম.এ মাসুদকে মারধর করে বরিশাল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আল-মামুন। শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে বসতে না দেওয়ার অজুহাত তুলে মাসুদকে মারধর করে বিতর্কিত ছাত্রলীগ নেতা মামুন।

ডিবেটিং সোসাইটির (বিডিএস) সভাপতি এম.এ মাসুদ জানান, গত ৩০ জানুয়ারি নগরের অশ্বিনী কুমার হলে জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা উৎসবের সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এমপি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তিনি (মাসুদ)। মন্ত্রীর গাড়ির সঙ্গে থাকা মোটরসাইকেল বহরে ওই অনুষ্ঠানে যান আল-মামুনসহ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। তাদেরকে দর্শনার্থীদের চেয়ারের বসতে দেওয়া হয়।

এর জের ধরে বেলা ১১টার দিকে তার কাছে জানতে চায় বিতর্ক উৎসবে তাকে ডেকে কেন মঞ্চে বসতে দেওয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গ তুলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজের এক পর্যায়ে মাসুদকে কয়েটি চর-থাপ্পর দেয় আল-মামুন। ভবিষ্যতে সে বরিশালে বিডিএস’র অনুষ্ঠান করতে না দেওয়ারও হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে মামুন।

Print Friendly, PDF & Email