ধনী ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার বাজেট : বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি বলেছে, এ বাজেটে বাংলাদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী অর্থনৈতিক চাপে পড়বে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করবে না। এই বাজেট ধনী ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার বাজেট। এ ছাড়া দলটি বলেছে, বর্তমান সরকারের বাজেট দেওয়ার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আজ শুক্রবার বাজেট নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এ বাজেট জনগণ গ্রহণ করেনি। বাজেটে বৈষম্য বাড়বে। ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে, দরিদ্ররা আরও দরিদ৶ হচ্ছে। মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্তের ওপর করের চাপ বাড়বে। বাংলাদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী অর্থনৈতিক চাপে পড়বে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগ ও তাদের সুবিধাভোগীদের জন্য এ বাজেট। দুর্নীতির সব পথ এখন উন্মুক্ত। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, বাজেটের মাধ্যমে জনগণ করের বোঝা পেয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। বাজেটের প্রতিক্রিয়া জানাতে বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মির্জা ফখরুল। তাতে বলা হয়, এটি উচ্চাভিলাষী বাজেট। বাজেটে ব্যয় বেড়েই চলেছে। ঘাটতি মোকাবিলায় ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাবে। ঋণের পরিমাণ সুদসহ জমতে জমতে পাহাড়সম হলেও পরিশোধের কোনো দিকনির্দেশনা এ বাজেটে নেই, যার দায়ভার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর পড়বে।

বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয়ের সমালোচনাও করেছে বিএনপি। বেকারত্ব বাড়ছে জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, জিডিপি ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ বলা হলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে মারা যাচ্ছে। এ ছাড়া দক্ষ জনশক্তি তৈরি এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বাড়ছে না।

বিএনপি বলছে, সরকার পরোক্ষে কর বেশি আদায় করছে, যা সাধারণ মানুষের ওপর বেশি পড়বে। অন্যদিকে উৎপাদনশীল খাত বাড়ছে না ও বহুমুখী হচ্ছে না। শিল্পকারখানার সংখ্যা বাড়েনি বরং কমেছে। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে সুবিধা দেওয়া এবং কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়।

আয় ও সম্পদের বৈষম্য বেড়েছে বলে জানায় বিএনপি। দলটির অভিযোগ, সরকারদলীয় লোকেরাই সুবিধাভোগী হচ্ছে। ধনী ও ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে। ক্ষুদ্র ও প্রকৃত ব্যবসায়ীদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।

এ সরকারের বাজেট দেওয়ার নৈতিক অধিকার নেই, উল্লেখ করে বিএনপি বলছে, সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, জনগণের কাছে দায়বদ্ধও নয়। যাদের হাতে দেশের অর্থনীতি জিম্মি, তারাই সরকার পরিচালনা করছে। দেশের জনগণ এ বাজেট গ্রহণ করবে না বলেও জানায় বিএনপি।

Print Friendly, PDF & Email