শিরোনাম :

  • বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

জলবায়ুর সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় ষষ্ঠ বাংলাদেশ

climate change-2নিউজ ডেস্কঃ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ঝড়, বন্যা, ভূমিধস ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সর্বোচ্চ ঝুঁকির সূচকে ছয় নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। গত এক দশকে সারা বিশ্বে এসব দুর্যোগে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সর্বোচ্চ ঝুঁকির সূচকে থাকা প্রথম তিনটি দেশ হলো হন্ডুরাস, মিয়ানমার ও হাইতি।
বৃহস্পতিবার জার্মানির বন শহর ভিত্তিক জলবায়ু পরামর্শক গোষ্ঠী ‘জার্মান ওয়াচ’ প্রকাশিত ‘বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক-২০১৬’ এর প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

জলবায়ু বিশ্লেষকদের তৈরি ওই প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়, বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে ঝুঁকির সূচকে থাকা দেশগুলোতে আরও দুর্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির এক খবরে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনটি প্যারিস সম্মেলনে যোগ দেওয়া ১৯৫টি দেশের প্রতিনিধি, যাঁরা জলবায়ু নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন তাঁদের জন্য একটি সতর্কবার্তা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগে হন্ডুরাস, মিয়ানমার ও হাইতি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন দেশে প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি প্রাকৃতিক দুর্যোগে ৫ লাখ ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। ক্ষতি হয়েছে ২.৯৭ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি। সূচকে হন্ডুরাস, মিয়ানমার ও হাইতির পর চার নম্বরে রয়েছে ফিলিপাইন। এর পরই রয়েছে নিকারাগুয়া, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড এবং গুয়াতেমালা।

প্রতিবেদনে বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, মানবজাতি যদি গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন, বিশেষ করে যা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উৎপন্ন হয়, সেটা আটকাতে না পারে তাহলে সমুদ্রসীমার উচ্চতা, ঝড়, বন্যা ও খরা আরও মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

তবে প্রতিবেদনে শুধুমাত্র দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার প্রত্যক্ষ ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে তাপ প্রবাহের ফলে সৃষ্ট খরা এবং দুর্ভিক্ষের মতো দুর্যোগপূর্ণ ঘটনার পরোক্ষ প্রভাব আরও ভয়াবহ বলে উল্লেখ করা হয়।

সামনে আরও ভয়াবহ দুর্যোগ:
বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, প্রতিবেদনটি মূল সমস্যার মাত্র একটি অংশ। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সংকটের পূর্ণ সূচক এটি নয়। প্রতিবেদনে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা, হিমবাহ গলন কিংবা সমুদ্রে উষ্ণতা ও অ্যাসিডের বিষয়ে কোনো গবেষণা করা হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু ঝুঁকির সূচকে বিভিন্ন সময়ে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে যে ক্ষয়ক্ষতি ও সংকটের তথ্য উঠে এসেছে তাতে দেশগুলোর বোঝা উচিৎ যে এটা একটা সতর্কবার্তা এবং ভবিষ্যতে প্রায়ই এ ধরনের মারাত্মক দুর্যোগ আঘাত হানতে পারে।

জার্মান ওয়াচ ২০১১ সালের ৩০ নভেম্বর প্যারিসের উত্তর শহরতলির লে বুরগেটে জাতিসংঘ আবহাওয়া সম্মেলনে জলবায়ুর ধ্বংসাত্মক হুমকি মোকাবিলা করতে বিশ্বজনীন চুক্তি করার আহ্বান করেছিল।