আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন
পকিস্তানের বেতন খাওয়ারা মুক্তিযোদ্ধা, আর না খেয়ে পালিয়ে বেড়ানোরা হয়ে গেল রাজাকারঃ গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘একাত্তরে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা পাকিস্তানের বেতন ভাতা খেয়েছে তারা নির্বোধের মতো মারা গেল। আর আমাদের মতো নির্বোধেরা শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে ফুল দিই। আবার না গেলে পাপ হয়। তারা যদি এতো বৃদ্ধিমান হয়, তাহলে ১৪ তারিখ পর্যন্ত নিজের ঘরে থাকেন কীভাবে?’ জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে শুক্রবার বিকালে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
গয়েশ্বর বলেন, ‘নেতৃত্বের অজ্ঞতা ও আগাম সতর্কতার অভাবে ২৫ মার্চ যারা মারা গেছেন, তারা না জানার কারণে মারা গেছেন। কিন্তু ১৪ ডিসেম্বর যারা মারা গেছেন, তারা অজ্ঞতার কারণে মারা যায়নি। তারা জ্ঞাতসারেই ছিলেন। কারণ তখনও তারা প্রতিদিনই তাদের কর্মস্থলে যেতেন এবং পাকিস্তানের বেতন খেয়েছেন।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘যারা পকিস্তানের বেতন খাইল তারা হয়ে গেল মুক্তিযোদ্ধা, আর যারা পালিয়ে না খেয়ে বেড়াল- তারা হয়ে গেল রাজাকার। এই বিষয়গুলো পরিষ্কার করা দরকার। কারণ এগুলো এখন ডাবল স্ট্রান্ডার্ড হয়ে গেছে।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রিজভী আহমেদ’শীর্ষক ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ন্যাশনালিস্ট এক্স স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন।
এর আগে, বিএনপি চেয়ারপারসন এক অনুষ্ঠানে ‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে’ বলে মন্তব্য করেন। তার এই মন্তব্যে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
শুক্রবারের আলোচনা সভায় গয়েশ্বর রায় খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমর্থনে বলেন, ‘এখন তো আধুনিক প্রযুক্তি আছে, প্রশাসন আছে। ইচ্ছে করলেই সাত দিনের মধ্যে শহীদদের পরিসংখ্যানটি বের করতে পারি। এ কারণে আওয়ামী লীগের অজ্ঞ বুদ্ধিজীবীদের বলব, প্রধানমন্ত্রীকে বলুন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি জরিপ করে ফেলেন। তাহলে প্রকৃতচিত্র চলে আসবে।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বলেছেন, শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। তিনি কমও বলেননি, বেশিও বলেননি। এই বিতর্ক কিন্তু ৯১ সালে সংসদে উঠেছিল। প্রয়াত (অব.) কর্নেল আকবর হোসেন এই প্রশ্নটি করেছিলেন। শেখ সাহেব (বঙ্গবন্ধু)হিথ্রো এয়ারপোর্টে যেটি বলেছেন সেটি তো আর বাণী নয় যে পরিবর্তন করা যাবে না। অজ্ঞতাবশত তিন লাখ, তিন মিলিয়ন হয়ে গেছে। তাড়াহুড়োর মধ্যে হয়তো এমনটি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যতদূর জানি, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে দুই লাখ পঁচাত্তর হাজার শহীদ পরিবারের তালিকা আছে। তাহলে বাকি ২৭ লাখ কোথায় গেল? গলার জোরে কথা না বলে প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। সেক্ষেত্রে সংখ্যা ৩০ লাখের জায়গায় ৬০ লাখ হলে ক্ষতি কোথায়? ৩ লাখ হলেও তো সমস্যা নেই। দেশ তো স্বাধীন হইছে। এটি বিতর্কের বিষয় নয়।’
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্য করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আপনারা একাত্তরে যত গ্রামে মানুষ মারা গেছেন, সেখান থেকে একটা নম্বর দিয়ে ম্যাসেজ পাঠাতে বলেন। দেখবেন তখন সঠিক পরিসংখ্যানটি চলে আসবে। এটি নিয়ে বিতর্ক করার দরকার নেই।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন বাহারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি নেতাদের মধ্যে তাইফুল ইসলাম টিপু, আশিফা আশরাফি পাপিয়া প্রমুখ।