ফ্যাসিবাদ বিরোধীদের বিভেদ পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের লাভবান করবে – খেলাফত মজলিস
‘সাংবাদিকতায় আপোষ করেনি বলেই ফাগুনকে মেরে ফেলা হয়েছে’
নিউজ ডেস্কঃ ‘সাংবাদিক হিসেবে আমার চেয়ে কঠিন কাজটি বোধহয় আর কাউকে করতে হয়নি। নিজের সন্তানের মৃত্যু নিয়ে লিখতে হচ্ছে। তাও কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, খুন হবার কথা। একজন পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ নাকি সবচেয়ে ভারী বোঝা, আমি সে বোঝা বয়েছি। উপরি হিসেবে লিখেছি নিজ প্রাণপ্রিয় সন্তানের মৃত্যুবিষয়ক কলাম।
হ্যাঁ, আমি দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত তরুণ সাংবাদিক ইহসান ইবনে রেজা ফাগুনের পিতা বলছি। সেই ফাগুন, যার বয়স মাত্র একুশ বছর। যে অনার্স পড়ার পাশাপাশি যোগ দেয় সাংবাদিকতায়। যোগ দেয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল প্রিয় ডটকমের ইংরেজি বিভাগে। ঈদের পর ওর যোগ দেওয়ার কথা ছিল অন্য আরেকটি নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজের ইংরেজি বিভাগে। কিন্তু ওর আর যোগ দেওয়া হলো না, চলে গেল, আমাকে ছেড়ে, আমাদের ছেড়ে। চলে গেছে বললে ভুল বলা হবে, তাকে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। ঢাকা থেকে ট্রেনে শেরপুরের বাড়ি আসার পথে জামালপুরের নান্দিনায় নির্মমভাবে হত্যা করে রেললাইনের পাশে ফেলে রাখা হয়েছিল ফাগুনকে। গত ২১ মের ঘটনা এটা। কিন্তু এখনো সেই হত্যাকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি। গ্রেফতার হয়নি খুনিদের কেউ।
আমার ছেলে তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল, I’d rather die like a man, than live like a coward…। সে কাওয়ার্ড হিসেবে হয়তো বাঁচতে চায়নি। কারণ সে তার স্বল্প সময়ের সাংবাদিকতার জীবনে কখনো আপোষ করেনি। বাচ্চা একটি ছেলেকে প্রলোভন দেখানো হয়েছিল একটি খবরের ব্যাপারে। বলা হয়েছিল, খবরটি নামিয়ে দিতে। সে নামিয়ে নেয়নি খবরটি। অবলীলায় লোভনীয় সেই প্রলোভন প্রত্যাখ্যান করেছিল ফাগুন। তারপর তাকে শাসানো হয়েছিল দেখে নেওয়ার। তাতেও সে ভয় পায়নি, কারণ সে কাওয়ার্ড হিসেবে বেঁচে থাকতে চায়নি। অথচ ওর বয়েসি কেন, অনেক ধাড়ি’রই ওই লোভ সামলানো সম্ভব নয়। হ্যাঁ, আমি এমনি এক সাংবাদিক ইহসান ইবনে রেজা ফাগুনের বাবা। শোকে ভেঙে পড়া একজন মানুষ, সাথে গর্বিতও। গর্বিত এই ভেবে যে, আমার শিক্ষাটা বৃথা যায়নি। ফাগুন তার ক্ষুদ্র জীবনে যতদিন বেঁচেছে মানুষের মতন বেঁচেছে, কাপুরুষের মতন নয়।…’
লেখক : নিহত একুশ বছর বয়সী সাংবাদিক ফাগুন রেজার বাবা কাকন রেজা
# ফেসবুক থেকে নেয়া