ফ্যাসিবাদী রাজনীতি নিষিদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান বিশিষ্টজনের
১১ বছরের সব হত্যা গুম নির্যাতনের বিচার চান সাংবাদিক নেতারা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যার মাধ্যমে দেশের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হত্যা করা হয়েছে। বছর বছর ধরে বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হত্যা করা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণের হীন উদ্দেশ্যে বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার’ প্রতিবাদে আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এ কথা বলেন।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে টর্চার সেলে পরিণত করেছে ছাত্রলীগ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা আসার পর হাজার হাজার সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করেছে। অনেক গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে। দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। এখন সময় এসেছে এই সরকারকে বিদায় করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার। এর জন্য সকল গণতন্ত্রমনা সাংবাদিককে প্রস্তুত থাকতে হবে। যখন আন্দোলনের ডাক আসবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
এ ছাড়া সাংবাদিকরা বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের খুনিদের দ্রুত বিচারের দাবি জানায়। শুধু আবরার হত্যার নয়, গত ১১ বছরের সব হত্যা, গুম, নির্যাতন নিপীড়নের বিচার হলেই এ ধরনের বর্বরতা বন্ধ হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজি, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, সিনিয়র সহসভাপতি নুরুল আমিন রোকন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি একেএম মহসিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি শাহিন হাসনাত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশ থেকে ১২ দফা দাবি পেশ করেন সাংবাদিকরা। দাবিগুলো হচ্ছে :
১। বুয়েটের মেধাবী ছাত্র শহীদ আবারারের খুনিদের বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচার করতে হবে।
২। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
৩। বুয়েটের দালাল ভিসিকে পদত্যাগ করতে হবে।
৪। আবরার হত্যার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৫। ৭ অক্টোবর আবরার দিবস ঘোষণা করতে হবে।
৬। ফেনি নদীর পানি বন্টন সহ ভারতের সাথে দেশের স্বার্থ বিরোধী চুক্তি সমূহ বাতিল করতে হবে।
৭। বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখলমুক্ত করে সহবস্থান নিশ্চিত শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
৮। সাংবাদিক সাগর-রুনি দম্পতিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার করতে হবে।
৯। বন্ধ মিডিয়া খুলে দিতে হবে।
১০। কথায় কথায় সাংবাদিকদের চাকুরিচ্যুতি, হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
১১। নবম ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ গেজেটে সংযোজিত সাংবাদিকদের স্বার্থ বিরোধী ধারা, উপধারা বাতিল করে অবিলম্বে সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করতে হবে।
১২। দেশ পরিচালনায় চরম ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে বর্তমান অনির্বাচিত সরকারকে পদত্যাগ করে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে হবে।
পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোড প্রদক্ষিণ করে প্রেস ক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।