ফ্যাসিবাদ বিরোধীদের বিভেদ পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের লাভবান করবে – খেলাফত মজলিস
নুসরাতের পরিবার দ্রুত বিচার পেল, সাগর-রুনীর পরিবার কেন পায় না
আতাউর রহমান ♦
নুসরাত হত্যার ঘটনা ঘটে গত ৬ এপ্রিল। ৮ এপ্রিল এ ঘটনায় সোনাগাজী থানায় মামলা হয়। মাত্র ৪৮ দিনের মাথায় ২৮ মে ১৬ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেওয়া হয়। এরপর মাত্র ৬১টি কার্যদিবসে ৮৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ, আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন ও যুক্তিতর্ক গ্রহণের পর গত ২৪ অক্টোবর ১৬ আসামির সবার ফাঁসির রায় দেওয়া হয়।
এর আগে ২০১৫ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশে শিশু হত্যার দুটি চাঞ্চল্যকর ঘটনায় কম সময়ে মামলায় রায় হয়। সিলেটে ১৩ বছরের সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং খুলনায় মলদ্বার দিয়ে হাওয়া ঢুকিয়ে ১৩ বছরের রাকিব হাওলাদারকে হত্যার দায়ে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারের জন্য আদালতের সময় লাগে যথাক্রমে ১৯ ও ১১ কার্যদিবস। এ তিনটি হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রমাণ করে যে আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা থাকলেই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড বা ঘটনার দ্রুত বিচার সম্ভব।
ফেনী জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) হাফেজ আহম্মদ বলেন, নুসরাত হত্যা মামলায় সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা ছিল দ্রুত তদন্ত শেষ করার। তারপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আন্তরিকতা ছিল মামলার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার। বিচারকেরও আন্তরিকতার কমতি ছিল না। সবার সম্মিলিত উদ্যোগে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেছেন, সব আলোচিত মামলা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া আছে। তবে কিছু ঘটনার তদন্তে সময় লেগে যায়।
প্রশ্ন হচ্ছে কত সময়? যদি কোন হত্যাকান্ডের তদন্তই সাড়ে ৭ বছরে শেষ না হয়? এর জবাব কী?
২০১২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি দম্পতি খুন হন। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদ্ঘাটনের আশ্বাস দেন। পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হাত ঘুরে তদন্তভার র্যাবের কাছে গেছে ওই বছরের ১৮ এপ্রিল। গত সাড়ে সাত বছরেও র্যাব তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি।
দীর্ঘদিনেও বিচার না পেয়ে হতাশ সাগর ও রুনির স্বজনরা। মামলার বাদী রুনির ভাই নওশের আলম রোমান বলেন, ‘এখন কী তদন্ত হচ্ছে আমরা তার আর কিছুই জানি না। ’
এ পর্যন্ত তদন্ত রিপোর্ট জমার জন্য ৬৮ বার সময় নিয়েছে র্যাব।