শিরোনাম :

  • রবিবার, ৬ জুলাই, ২০২৫

‘নতজানু ভূমিকা ছেড়ে গণমুখী সাংবাদিকতায় না ফিরলে গণমাধ্যমের দুর্যোগ কাটবে না’

যশোর প্রতিনিধি |

সরকারের তাবেদারি ও নতজানু ভূমিকা পরিহার করে গণমুখী সাংবাদিকতায় না ফিরলে গণমাধ্যমের চলমান দুর্যোগ কাটবে না। গভীর অন্ধকারে ধাবমান গণমাধ্যমকে রক্ষা করতে দল মত পথ নির্বিশেষে সাংবাদিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তা না হলে দেশে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বলে কিছু অবশিষ্ট থাকবে না ।

রবিবার (৩ নভেম্বর) যশোরে এক সাংবাদিক সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।

প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে আয়োজিত এ সাংবাদিক সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী এবং প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে মহাসচিব এম আবদুল্লাহ। গণমাধ্যমে বিরাজমান অস্থিরতা নিরসন, নবম ওয়েজবোর্ড সংশোধন, সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের বিচার ও বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়াসহ বিভিন্ন দাবীতে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সমাবেশের আয়োজন করে সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর (জেইউজে) সভাপতি শহীদ জয়। সাধারণ সম্পাদক আক্রামুজ্জানের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক বেনজীন খান, খুলনা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি রাশিদুল ইসলাম, জেইউজের সাবেক সভাপতি নূর ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান সাইফ, সাইফুল ইসলাম সজল, তৌহিদ জামান ও এম. আইউব প্রমুখ।

রুহুল আমিন গাজী বলেন, দেশে লুটপাটকারীরা, অন্যায়-অবিচারকারীরা মানুষের কাছ থেকে রেহাই পাবে না। জনগনের বিচারের মুখোমুখি একদিন তাদের হতেই হবে। তিনি বলেন, পাকিস্তানের কাছ থেকে যে গণতন্ত্র উদ্ধারে মহান মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম, রক্তে অর্জিত সেই গণতন্ত্র আজ ভূলুন্ঠিত। ২৯ ডিসেম্বর যেভাবে রাতের অন্ধকারে ভোট চুরি করে নির্বাচন করা হয়েছে। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে এজন্য মুক্তিযুদ্ধ করি নাই।

তিনি বলেন গণতন্ত্র এবং গণমাধ্যম একই সূত্রে গাথা। যেখানে গণতন্ত্র থাকে না সেখানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকে না। তাই গণতন্ত্র, মানুষের ভোটাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় ধুকে ধুকে মরার চেয়ে আসুন একবার মরার সিদ্ধান্ত নেই।

সাগর-রুনীসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়ার দাবী জানিয়ে এই সাংবাদিক নেতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, মামলা নির্যাতন বন্ধ না হলে সারা দেশে সাংবাদিক সমাজ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ বলেন, গত চার মাসে সারাদেশে গড়ে ২০-২২ জন করে সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কল্পনাতীত অস্থিরতা চলছে দেশের গণমাধ্যমে। গণহারে চাকুরিচ্যুত করা হচ্ছে। গণমাধ্যম বলে আজ দেশে কিছু নাই। গণমাধ্যমের যে চরিত্র থাকা উচিত, তা আজ দেশের গন্যমাধ্যমগুলোতে অনুুুুপস্থিত। যারা একটু লেখার চেষ্টা করেন তাদের গনভবন থেকে সিগন্যাল পাওয়ার পর লিখতে হয়। মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দূর্নীতি চলছে উল্লেখ করে এই সাংবাদিক নেতা বলেন, বিশাল দুর্নীতি থেকে মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতেই ক্যাসিনো অভিযান করা হচ্ছে। দেশের গণতন্ত্র এবং গণমাধ্যমের দুরবস্থা থেকে মুক্তির জন্য দল মত নির্বিশেষে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া দেশের পরিস্থিতি বদলানো যাবে না বলেও উল্লেখ করেন এম আবদুল্লাহ।