শিরোনাম :

  • রবিবার, ৬ জুলাই, ২০২৫

ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, তল্লাশি

আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার জামিনের শুনানি শুরু

আদালত প্রতিবেদক |

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা জামিনের আবেদনের ওপর আপিল বিভাগে শুনানি শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার মামলার শুনানি উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্টে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ শুনানি হচ্ছে। আজকের আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৮ নম্বরে ছিল খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন।

সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেটসহ সব গেইটে জনসাধারণকে তল্লাশি ও পরিচয়পত্র চেক করছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। আইনজীবী সমিতি ভবনের প্রবেশ পথে ও আইনজীবী সমিতি ভবন থেকে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের প্রবেশ পথেও ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।  

গত ২৫ নভেম্বর জামিন আবেদনের শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ২৮ নভেম্বর দিন ঠিক করেন।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত বছর ২৯ অক্টোবর খালেদা জিয়ার সাত বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত।

এর আগে ১৭ নভেম্বর (রোববার) এ আবেদন উপস্থাপনের পর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান শুনানির জন্য ২৫ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেন। সেই অনুসারে সোমবার আবেদনটি কার্যতালিকায় আসে।

গত ১৪ নভেম্বর আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় জামিন চেয়ে আপিল আবেদন করা হয়।

এদিকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পেয়ে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। আপিলের পর হাইকোর্টে যা বেড়ে ১০ বছর হয়।

পরে ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে খালেদা জিয়া জামিন আবেদন করেন। তবে সেই আবেদন এখনও আদালতে উপস্থাপন করেননি তার আইনজীবীরা।

গত বছরের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫’র বিচারক মো. আখতারুজ্জামান (বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।

একইসঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সাজা হয়েছে মামলার অপর তিন আসামিরও।

খালেদা জিয়ার পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সদ্য প্রয়াত সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। 

গত বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়।

পরে গত ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অর্থদণ্ড স্থগিত এবং সম্পত্তি জব্দ করার ওপর স্থিতাবস্থা দিয়ে দুই মাসের মধ্যে ওই মামলার নথি তলব করেছিলেন।

এরপর ২০ জুন বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। ৩১ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।

পরে ১১ সেপ্টেম্বর ফের জামিন আবেদন ফেরত দেন বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ। 

২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হলে দুদকের পক্ষে এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণা করা হয়।