শিরোনাম :

  • মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪

সংবাদমাধ্যমে উপেক্ষিত জিয়া ও কিছু কথা

♦ এম আবদুল্লাহ ♦

বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পরই সাংবাদিকদের লেখার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা অবারিত করেছিলেন। জিয়াউর রহমান যখন বন্ধ সব সংবাদপত্র চালুর ব্যবস্থা করে স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ সুগম করলেন তখন প্রবীণ সাংবাদিক ও তৎকালীন ঐক্যবদ্ধ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা নির্মল সেন লিখেছিলেন “পাখা ভারি হয়ে গেছে, এত দিনের দলননীতির পর মুক্ত পাখা মেলে উড়তে কষ্ট হচ্ছে সাংবাদিকদের”। নির্মল সেনের এ অনুভূতি প্রমাণ করে স্বাধীনতার পর কার্যত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ই প্রথম সাংবাদিকরা স্বাধীনতার স্বাদ পান। আর সংবাদপত্রের স্বাাধীনতা নিশ্চিত ছিল বলে তাঁর রাষ্ট্রপরিচালনাকালে সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছিল। দেশের উন্নয়নে সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা অনুধাবন করেছিলেন বলেই শহীদ জিয়া সে সময়ের জনপ্রিয় সাপ্তাহিক বিচিত্রার সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন “জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে আপনারা জনমত গড়ে তুলুন, যা অবশ্যই সংগঠিত ও ব্যবহৃত হবে জাতীয় উন্নয়ন ও পুনর্গঠনের জন্য। সবাইকে এক কথা মনে রাখতে হবে যে, কেবল অনৈক্যের কারণে এ দেশ সুদীর্ঘ দু’শ বছর বিদেশী শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক শোষিত হয়েছে। কাজেই জাতীয় ঐক্যই কেবল আমাদের জীবনে আনতে পারে শক্তি, অগ্রগতি ও সুখ-শান্তি। ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য এ আমাদের এক অবশ্য কর্তব্য। আমাদের বর্তমান উৎসর্গিত হোক ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য” (বিচিত্রা, ২৪ মার্চ ১৯৭৮ সংখ্যা)।

জিয়াউর রহমান তাঁর পূর্বসূরীর নীতি অনুযায়ী সরকারি মালিকানায় ৪টি সংবাদপত্র চালু রেখে বাকি সব সংবাদপত্র বন্ধ রাখার নীতি বহাল রাখলে আজ এত এত সংবাদমাধ্যম থাকতো? কয়েক হাজার সংবাদমাধ্যম না থাকলে হাজার হাজার সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী থাকতেন? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুব সহজ হলেও তা এখন আর কেউ সহজভাবে দেবেন না। কেউ দেবেন না সংকীর্ণতার কারণে, আবার অনেকে মুখ খুলবেন না ভয়ে। তবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সংবাদমাধ্যম অবারিত না করলে আমি অন্ততঃ সাংবাদিক হতে পারতাম না।
দুঃখজনকভাবে যার হাত ধরে সংবাদমাধ্যমের বিকাশ ও অবাধ স্বাধীনতা অর্জন তার প্রতি উপেক্ষা ও অবহেলা দৃষ্টিকটু পর্যায়ে চলে গেছে।

আজ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৯তম শাহাদাৎবার্ষিকীতে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম তাঁর প্রতি যে অবিচার করলো তা সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার কোন মানদন্ডেই গ্রহণযোগ্য নয়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, বিএনপি শাসনামলে যেসব সংবাদপত্র ৩০ মে’তে শোকের মাতম করেছে, কয়েক পৃষ্ঠাজুড়ে বিশেষ ক্রোড়পত্র কিংবা প্রবন্ধ নিবন্ধ ছেপেছে, তারা এখন কয়েক ইঞ্চি জায়গা দিতেও কার্পন্য করছেন। এক সময় যে সংবাদপত্রের কাছে জিয়াউর রহমানের নির্মম হত্যকান্ডের দিনটিতে প্রথম পৃষ্ঠার শীর্ষে সংবাদমূল্য ছিল, এখন কেন নেই সে প্রশ্নের উত্তর হয়তো পাওয়া যাবে না। এভাবে হয়তো জিয়াউর রহমানকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে-হবে, কিন্তু তা সফল হবে বলে মনে হয় না।

আজকের সংবাদপত্রে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকীর সংবাদ কী মর্যাদা পেয়েছে তা চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক।


শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলো শহীদ রাষ্ট্রপতিকে স্থান দিতে পেরেছে মূদ্রণ সংস্করণে দ্বিতীয় পৃষ্ঠার অষ্টম কলামে ভাঁজের খানিকটা উপরে। ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ’ শিরোনামে সবমিলিয়ে ইঞ্চি ছয়েক জায়গা দিয়েছে। পত্রিকাটি ছোট দুই প্যারায় নিজস্ব বর্ণনা শেষ করে বিএনপি মহাসচিবের বিবৃতি ও কর্মসূচি তুলে ধরেছে। চার বক্যে ও ৪৫ শব্দের দুই প্যারাতে প্রথম আলো সাবেক রাষ্ট্রপতিকে স্মরণ করেছে। লিখেছে “সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৩০ মে। ১৯৮১ সালের এ দিনে চট্টগ্রামে সার্কিট হাউজে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে তিনি নিহত হন। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন। দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতাও তিনি।”

বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকা শেষ পৃষ্ঠায় মাঝামাঝি প্রথম কলামে ‘জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে। ছবি ছেপেছে হাফ কলামে। তাদের সংবাদের বর্ণনা প্রথম আলোর অনুরূপ। চার বাক্যে জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিবের বিবৃতি ও কর্মসূচি তুলে ধরেছে। পত্রিকাটি আগের বছর একই শিরোনাম ও বর্ণনায় শেষ পৃষ্ঠায় প্রতম কলামের একেবারে শীর্ষে স্থান দিয়েছিল। এবার কলামের মাঝামাঝি নামিয়ে এনেছে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালের ৩০ মে’তেও বাংলাদেশ প্রতিদিন জিয়াউর রহমানকে প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম কলামে জায়গা দিয়েছিল। সম্পাদকীয় পাতায় দু’টি নিবন্ধ প্রকাশ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছিল। ২০১৭ থেকে পত্রিকাটিতে জিয়াউর রহমানের স্থান হচ্ছে শেষ পৃষ্ঠায়।

বসুন্ধরা গ্রুপের আরেক বাংলা দৈনিক কালের কন্ঠ তৃতীয় পৃষ্ঠার অষ্টম কলামে উপরে ‘আজ জিয়াউর রহমানের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী শিরোনামে সিঙ্গেল কলামে সংবাদ প্রকাশ করেছে। গত বছর দ্বিতীয় পৃষ্ঠার মাঝামাঝি স্থান পান জিয়াউর রহমান। পেছন ফিরে দেখা যাচ্ছে ২০১৬ সালেও পত্রিকাটি ৩০ মে’তে জিয়াউর রহমানের সংবাদ শেষ পৃষ্ঠায় স্থান দিয়েছে এবং বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করেছে।

দৈনিক যুগান্তর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করেছে তৃতীয় পৃষ্ঠায়। পত্রিকাটি জিয়ার একটি পোট্্েরটও স্থান দিতে পারেনি। ছবিছাড়া ১৮ পয়েন্টের সংকীর্ণ অক্ষরে ‘আজ জিয়াউর রহমানে ৩৯তম শাহাদাৎবার্ষিকী’ শিরোনামে ভাঁজের একটু উপরে মাঝামাঝি স্থানে সিঙ্গেল কলামে অনেকটা তাচ্ছিল্যের সঙ্গেই প্রকাশ করেছে। ৪০ শব্দের একটি প্যারায় জিয়াউর রহমান সম্পর্কে নিজস্ব বর্ণনা শেষ করেছে পত্রিকাটি। তার পর দলীয় কর্মসূচির সংবাদ। বর্ণনায় বলেছে-“ সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৯তম শাহাদাৎবার্ষিকী আজ। ১৯৮১ সালের এদিন ভোরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বিপথগামী কিছু সেনা সদস্যের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন তিনি। এর পর থেকে বিএনপি ও অংগ সংগঠনগুলো দিনটিকে শাহাদাৎবার্ষিকী হিসেবে পালন করে আসছে।”


এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, গত বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে যুগান্তর জিয়াউর রহমানে শাহাদাৎবার্ষিকীর সংবাদটি অপেক্ষাকৃত অধিক গুরুত্ব দিয়ে শেষ পৃষ্ঠার প্রথম কলামে ছবিসহ স্থান দিয়েছিল এবং লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমানের লেখা “তিনি বিশ্বাস করতেন জনগণ সব ক্ষমতার উৎস” শিরোনামে বাতায়ন পাতায় প্রকাশ করেছিল। আরও পেছনে চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে ২০১৩ সালে যুগান্তর শাহাদাৎবার্ষিকীতে জিয়াউর রহমানকে প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম কলামের একেবারে উপরে স্থান দিয়েছিল। যদিও প্রতিবেদনের সারবস্তু ছিল অভিন্ন। একই বছর সম্পাদকীয় পাতায় বিশেষ নিবন্ধ ও বিএনপি’র বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছিল। ২০১৪ সালের ৫জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনিপি ক্ষমতায় ফিরতে না পারার পর থেকে পত্রিকাটিতে জিয়াউর রহমানের স্থান এক লাফে শেষ পৃষ্ঠায় চলে যায় এবং এবারে ভেতরে।

দৈনিক নয়াদিগন্ত প্রথম পৃষ্ঠায় ফোল্ডের উপরে দুই কলামে বক্স করে গুরুত্বসহকারে ‘জিয়াউর রহমানের ৩৯তম শাহাদাৎবার্ষিকী আজ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা, আধুনিক বাংলাদেশর রূপকার হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চে জিয়াউর রহমানের কন্ঠে স্বাধীনতার ঘোষণা দিশেহারা জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার সাহস যুগিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। পত্রিকাটি সম্পাদকীয় পাতায় ‘কৃষি উন্নয়নে শহীদ জিয়ার অবদান’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। এছাড়া বিএনপি’র পক্ষ থেকে একটি বিশেষ ক্রোড়পত্রও প্রকাশ করে নয়াদিগন্ত, যাতে মরহুম কবি আল-মাহমুদের একটি পুরনো লেখা ও কলামিস্ট আবদুল লতিফ মাসুমের নিবন্ধ স্থান পেয়েছে।

প্রাচীণ দৈনিক ইত্তেফাক শেষ পৃষ্ঠায় মাঝামাঝিতে ছবিসহ সিঙ্গেল কলাম প্রতিবেদন ছেপেছে। ‘জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবাষিকী আজ’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি শুরু হয় এভাবে- ‘আজ ৩০ মে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সেনাবাহিনীর কিছু বিপদগামী সদস্যের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন তিনি।” প্রতিবেদনের শেষ দিকে সাব-হেডিং দিয়ে ৮ বাক্যের সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত দেওয়া হয়। সেখানে তাঁর প্রতিষ্ঠিত দলটি এক দশক ধরে ক্ষমতার বাইরে থেকে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ ইত্তেফাকের মালিকানা মরহুম মানিক মিয়া পবিবারের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। তার আগে ৪টি পত্রিকা সরকারি মালিকানায় রেখে সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সরকারি মালিকানায় নেওয়া ৪টি পত্রিকার মধ্যে অন্যতম ছিল ইত্তেফাক।

দৈনিক ইনকিলাব প্রথম পৃষ্ঠায় প্রথম কলামে নিচের দিকে সিঙ্গেল কলামে স্থান দেয় শাহাদাৎবার্ষিকীর সংবাদ। শিরোনাম করেছে ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৯তম শাহাদাৎবার্ষিকী আজ’। বর্ণনায় সাবেক প্রেসিডেন্ট, বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচয়ের বাইরে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রের পূনঃপ্রবর্তক’ বিশেষণ দিয়ে ইন্ট্রো শেষ করে। সংবাদের শেষ দিকে জিয়াউর রহমানের জীবনবৃত্তান্ত তুলে ধরা হয়েছে। তাতে বলা হয়, জিয়াউর রহমান তার ঘটনাবহুল কর্মময় জীবনের কারণে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন এবং তাঁর সততা, কর্মপ্রিয়তা, দেশপ্রেম, নেতৃত্বের গুণাবলী মানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছে।

ট্যাবলয়েড দৈনিক মানবজমিন শেষ পৃষ্ঠায় প্রথম দুই কলামে বক্স করে ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করেছে। শিরোনামে ‘মৃত্যুবার্ষিকী’ লিখলেও বর্ণনায় বলা হয়েছে ‘শাহাদাৎবার্ষিকী’। মানবজমিনের প্রতিবেদনের শুরুটা এরকম- “বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তমের ৩৯তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ। ১৯৮১ সালের এই দিনে একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে শাহাদাতবরণ করেন তিনি।” স্বাধীনতার ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্নে মানবজমিনের কৌশলী বর্ণনা এরকম- “বিএনপির দাবি ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এরপর তার নেতৃত্বে অষ্টম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট মুক্তিযুদ্ধ শুরু করে। যুদ্ধকালে প্রথমে তিনি সেক্টর কমান্ডার ও পরে তার নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে গঠিত জেড ফোর্সের নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বীরউত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।”

দৈনিক সমকাল শেষ পৃষ্ঠার অষ্টম কলামে মাঝামাঝি ছবিসহ সিঙ্গেল কলামে স্থান দিয়েছে। বর্ণনায় প্রথম আলো ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের মত তারাও সংযমী। ছয় বাক্যে রাষ্ট্রপতি, দলের প্রতিষ্ঠাতা, সেক্টর কমান্ডার ও জেডফোর্সের অধিনায়কের পরিচয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছে। অবশ্য পত্রিকাটি সম্পাদকীয় পাতায় সিঙ্গেল কলামে বিএনপি নেতা খায়রুল কবীর খোকনের একটি লেখা প্রকাশ করেছে।

সমকালের পুরনো সংখ্যা ঘেঁটে দেখা গেছে ২০১৩ সালে পত্রিকাটি প্রথম পৃষ্ঠার অষ্টম কলামে উপরের দিকে স্থান দিয়েছিল। তখনকার রিপোর্টে জিয়াউর রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবনী ও তার রাষ্ট্র পরিচালনা ও রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরা হয়েছিল। ২০১৪ সালে প্রথম পৃষ্ঠার অষ্টম কলামের শীর্ষে, ২০১৫ সালে প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম কলামে, ২০১৬ সালে আবার প্রথম পৃষ্ঠার অষ্টম কলামের শীর্ষে স্থান দেওয়া হলেও হঠাৎ সাবেক এই রাষ্ট্রপতির সংবাদ মর্যাদা হারিয়ে শেষ পৃষ্ঠায় চলে যায়। ২০১৮ সালে স্থান হয় দ্বিতীয় পৃষ্ঠায়। গত বছর থেকে ফের শেষ পৃষ্ঠায়।

ইংরেজী দৈনিক ডেইলী স্টার শেষ পৃষ্ঠায় ছবিসহ সংক্ষিপ্ত সংবাদ প্রকাশ করলেও তাতে দলীয় কর্মসূচির বাইরে তেমন কিছু লেখেনি। বার্তা সংস্থা ইউএনবি’র বরাতে প্রকাশিত সংবাদে বিএনপি দিনটি পালন করবে জানিয়ে জিয়াউর রহমানের জন্ম ও দল প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করেই প্রতিবেদন শেষ করেছে।

এদিকে বিএনপি’র দলীয় মুখপত্র দৈনিক দিনকালের প্রকাশনা চালু আছে কিনা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অনলাইনেও ই-পেপার পাওয়া যায়নি। পত্রিকাটির অনলাইন ভার্সনে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকীর সংবাদটি দ্বিতীয় স্থানে দেখা গেছে। অগোছালো একটি বর্ণনায় জিয়াউর রহমান সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম সাবেক রাষ্ট্রপতির শাহাদাৎবার্ষিকীর সংবাদ বেশ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে। পত্রিকাটির বর্ণনায় “আজ ৩০ মে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৯তম শাহাদাত বার্ষিকী। তিনি ছিলেন মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন।”

অনলাইন সংবাদমাধ্যমে চোখ বুলিয়ে দেখা গেছে অনেক অনলাইন নিউজ পোর্টাল জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকীকে সংবাদমূল্যই দেয়নি। ৩০ মে বেলা ১২টা পর্যন্ত বিডিনিউজ২৪ ডটকম ও বাংলা ট্রিবিউনের প্রচ্ছদে এ নিয়ে কোন প্রতিবেদন চোখে পড়েনি। দুদিন আগে দলীয় কর্মসূচী নিয়ে একটি প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। বাংলানিউজ২৪ ডটকম ভোররাত ৪টার দিকে ‘জিয়াউর রহমানের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী শনিবার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন করলেও তা বেশিক্ষণ প্রচ্ছদে স্থান দেয়নি।

এম আবদুল্লাহ | মহাসচিব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন- বিএফইউজে

৩০.০৫.২০৩০