শিরোনাম :

  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

পাটকল বন্ধ না করে দুর্নীতিবাজদের অর্থ বাজেয়াপ্তের দাবি ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের

পাটকল বন্ধ করে অসংখ্য মানুষকে পথে না বসিয়ে দুর্নীতির সাথে জড়িত রাজনৈতিক ও শ্রমিক নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং আত্মসাতকৃত টাকা উদ্ধার করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করাসহ সরকারের নিকট ৮ দফা দাবি জানিয়েছেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ আশরাফ আলী আকন।

পাটকল বন্ধের অমানবিক সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন এর উদ্যোগে আজ রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত দাবী জানান।
এতে বক্তব্য রাখেন, সহ সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, সেক্রেটারী জেনারেল হাফেজ মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান, জয়েন্ট সেক্রেটারী জেনারেল মুফতী মোস্তফা কামাল, এ্যাসিস্টান্ট সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক আবদুল করিম, মাওঃ গোলাম কিবরিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মুহাম্মাদ ওমর ফারুক ও সহকারী প্রচার সম্পাদক সাইফ মোহাম্মদ সালমান প্রমূখ।
ঘোষিত দাবীসমূহ হচ্ছে- ১. যাদের কারণে পাটকলগুলোতে ১০,৬৭৪ কোটি টাকা লোকসান হল তাদের নাম, পদবী এবং ঠিকানাসহ শ্বেতপত্র আকারে তাদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। ২. দুর্নীতির সাথে জড়িত, রাজনৈতিক কিংবা শ্রমিক নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান ও আত্মসাৎকৃত টাকা উদ্ধার করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে। ৩. যাদের কারণে পাটকলগুলো বছর বছর বিপুল টাকা লোকশান দিয়েছে তাদেরকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়, দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর এবং বিজেএমসির সকল পদ থেকে বহিঃষ্কার করতে হবে। ৪. পাটকল বন্ধ নয় বরং সকল দুর্নীতিবাজদের টাকা উদ্ধার করে চায়না কোম্পানীর আধুনিকায়ন ও মানসম্মত পন্য উৎপাদনের পূর্বেকার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে হবে। ৫. পি.পি.পি নামক নতুন জঞ্জাল থেকে পাটকলগুলোকে সৎ ও যোগ্য লোকদের হাতে তদারকির দায়িত্ব দিতে হবে। ৬. পাটের বৈদেশিক বাজার ধরার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় এর মাধ্যমে নয় বরং দক্ষ বেসরকারী সংস্থার মাধ্যমে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে। ৭. দুর্নীতির হিংস্র থাবায় বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ ক্ষত-বিক্ষত। দেশের রাজনীতি দুষিত, বিষাক্ত এবং কলুষিত। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তী আজ চরম বিতর্কিত।
বৈদেশিক বিনিয়োগকারীগণ চরমভাবে নিরুৎসাহিত। এ অবস্থার উত্তরনের লক্ষ্যে শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে দেশের সকল মন্ত্রনালয়, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর এবং সমস্ত কর্পোরেট সংস্থাগুলো থেকে দুর্নীতিবাজ এবং এর সাথে জড়িত সিন্ডিকেট সদস্যদের বের করে দিতে হবে; সে যে কেউ হউক না কেন? উচ্চপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে সকল মন্ত্রনালয়ের সাথে সংশ্লিষ্টদের ১০ বছর আগে এবং ১০ বছর পরের সম্পদের তালিকা শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশ করতে হবে। ৮. দেশের অর্থনীতির বাস্তব অবস্থা জানার জন্য বিজেএমসিসহ সকল রাষ্ট্রায়ত্ব কলকারখানাসহ বিভিন্ন সেক্টরের লাভ-লোকসানের পরিমান শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশ করতে হবে।

মুহাম্মাদ আশরাফ আলী আকন বলেন, ৬ কারণে পাটকলগুলোতে এত বিপুল পরিমাণ টাকা লোকসান হচ্ছে।
১. সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি যথাক্রমে কাঁচা পাট ক্রয়ে দুর্নীতি, উৎপাদিত পণ্য বিক্রয়ে দুর্নীতি, জনবল নিয়োগে দুর্নীতি এবং মেশিনারিজ ক্রয়-বিক্রয়ে দুর্নীতি। ২. চরম অব্যবস্থাপনা ৩. বিরাট সমন্নয়হীনতা। ৪. সকল ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের বিশাল প্রভাব
৫. পাটকল আধুনিকায়নে বিরাট গাফলতি ও ষড়যন্ত্র। ৬. উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করণে কুচক্রী মহলের বিরাট কারসাজি ও সুবিধা লাভ।

অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের অভ্যুদয় সংগ্রামের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ পাট ও পাটকল। নির্বাচনী ঘোষণায় বন্ধ পাটকল চালুর কথা বলা হয়েছিল। সরকার সে ওয়াদা থেকে সরে এসে পাটকল বন্ধ করার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত আমরা মানি না। গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের নামে যে প্রহসনের কথা বলা হচ্ছে তা আদমজীসহ কোথাও অতীতে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি। এই মহামারীকালে শ্রমিকদের ছাটাই করার সিদ্ধান্ত অমানবিক। পাটকলগুলোতে লোকসানের জন্য যেই কর্মকর্তারা দায়ী তাদের বরিুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

বক্তারা বলেন, বর্তমান কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে পরিবেশবান্ধব এই শিল্পের চাহিদা দেশে এবং বিদেশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা ছিল, সঠিক পদক্ষেপ গ্রহন করে পাট শিল্পকে আধুনিকায়ন করে নতুন উদ্যমে চালু করা হবে। কিন্তু তা না করে পাটকল বন্ধের পদক্ষেপ শ্রমিক ও দশেপ্রমেকি জনগণের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে।

-খবর বিজ্ঞপ্তির

ডিএন/আইপি/বিএইচ/০২ঃ৪৫পিএম/০৫০৭২০২০-৬