শিরোনাম :

  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

নির্বাচন কমিশন এ দেশের সবচেয়ে ঘৃণিত ও ধিক্কৃত একটি প্রতিষ্ঠান: মির্জা ফখরুল

বর্তমান নির্বাচন কমিশন এদেশের সবচেয়ে ধিকৃত ও নিন্দিত একটি প্রতিষ্ঠান বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মাহবুব সাহেব বাদে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার ও কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা আছেন, তারা আজকে এদেশের সবচেয়ে ঘৃণিত ধিকৃত প্রতিষ্ঠান।

তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন আমরা এ নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করেছি। কিন্তু আজকে আপনারা লক্ষ্য করছেন, এদেশে যারা বুদ্ধিজীবী আছেন এমনকি বিদেশী সংস্থাগুলো স্পষ্টভাবে বলছেন এই নির্বাচন কমিশনকে সরাতে না পারলে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। সত্যিকার অর্থেই এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনোদিন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। বন্ধুরা এই কথা আমরা বহুবার বলেছি। যখন এ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয় তখনই আমরা বলেছিলাম, আওয়ামী লীগের পক্ষপাতিত্ব করে এমন লোকদের দিয়ে এই কমিশন গঠন করা হচ্ছে। সুতরাং এই নির্বাচন কমিশন কখনোই সুষ্ঠু ভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন না। পরবর্তীতে আমরা দেখেছি এই নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, জাতীয় নির্বাচন গেছে এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো একই কায়দায় তারা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। আপনারা শুনেছেন গতকাল গাজীপুরের শ্রীপুরে আমাদের প্রার্থীসহ যারা আছেন তাদেরকে কিভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন কোনো কিছু করতে পারেনি। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ভোট ডাকাতি করে নিয়ে যায় আর নির্বাচন শেষে জিজ্ঞেস করলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে। কিন্তু এমন সুষ্ঠু হয়েছে যে, দেখা যায় শতকরা ১০০ ভাগের বেশি ভোটও কোনো কোনো জায়গায় পড়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা জানেন ২০০৭ সালের জানুয়ারি ১১ জানুয়ারি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একটি অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়েছিল। তারা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ও সচেতনভাবে বাংলাদেশে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া চালু করেছে। আপনারা জানেন তারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সহ অসংখ্য রাজনীতিককে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। অত্যন্ত ভয়ের কথা আজকে এই আওয়ামী লীগ তাদের যোগসাজে এদেশে বিরাজনীতিকরণ চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের প্রায় ৩০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা। আজকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষে যে সব মানুষ, তাদের অনেককেই গুম হতে হচ্ছে। ইলিয়াস আলীসহ অসংখ্য যারা জনগণের প্রতিনিধি তাদেরকে গুম করা হয়েছে। আজকে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। সকালে খবরের কাগজ খুললেই দেখা যাচ্ছে যে সকল জায়গায় নির্বাচন হচ্ছে তা দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন নেই।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে মানুষের বাক স্বাধীবতাকে কেড়ে নেয়া হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ও সংগঠন করার অধিকার কে সম্পূর্ণভাবে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে। মোটকথা, এক কথায় ১৯৭৫ সালে তারা যেটা করতে পারেনি আজকে তারা গায়ের জোরে সেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চলেছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার জন্যই আজকে তারা রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, কৃষকদলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, যুবদল মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, মৎসজীবি দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ।