শিরোনাম :

  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

এরদোগানের জন্য বিশ্বের দীর্ঘতম তসবিহ বাংলাদেশী হায়দারের

164037_qqqআন্তর্জাতিক ডেস্ক: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগানের প্রতি ভালবাসা থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তসবিহ তৈরি করেছেন এক বাংলাদেশী। তিনি আবদুল্লাহ আল হায়দার। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম জলসুকলায়। ওই তসবিহটির দৈর্ঘ্য ৪৫০০ ফুট বা ১.৩ কিলোমিটার। ওজন ১৪৯ পাউন্ড বা ৬৭.৫ কিলোগ্রাম। তসবিহটি বানাতে প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ ঘন্টা কাজ করেছেন হায়দার। এতে তার সময় লেগেছে দুই মাস। এ নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাডোলু।

আবদুল্লাহ আল হায়দার এরদোগানের জন্য নিজের হাতে তৈরি করেছেন এই তসবিহ। এতে কোনো সাহায্য নেন নি তিনি। বলেছেন, তসবিহটি তৈরি করতে তার সময় লেগেছে দুই মাস। তার দাবি, এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় তসবিহ। তার ভাষায়, প্রতিদিন আমি এটি বানাতে ৫ থেকে ১০ ঘন্টা কাজ করেছি। যখনই এরদোগানের কথা মনে পড়েছে তখনই তসবিহ বুননে বসে পড়েছি। এতে মোট চারটি রঙের পুঁতি ব্যবহার করা হয়েছে। তা হলো সবুজ, কালো, স্বর্ণালি ও সাদা। মোট এক লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ পুঁতি ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতি এক হাজার পুঁতি পর পর গণনা করার সিস্টেম রাখা হয়েছে।

হায়দার বলেছেন, এসব পুঁতি কিনতে তার মোট দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এটাকে আরো সুন্দর করার প্রত্যয় রয়েছে তার মধ্যে। আশা করেন, যদি তিনি এই তসবিহ নিজের হাতে এরদোগানকে উপহার দিতে পারতেন!

হায়দারের এই কাজ কোনো শিশুসুলভ বিষয় নয়। রিসেপ তায়্যিপ এরদোগান বিশ্বজুড়ে যেসব মানবিক কাজ করেন বা করেছেন, নির্যাতিত মানুষ, বিশেষ করে মুসলিমদের অধিকারের পক্ষে তার যে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠস্বর এ জন্য তার ভীষণ ভক্ত হয়ে উঠেছেন হায়দার।
আবেগতাড়িত হয়ে যান হায়দার। তিনি বলেন, এরদোগান মানুষকে ভালবাসেন। ঘৃণা করেন নির্যাতনকারীদের। কাজ করেন ফিলিস্তিন, কাশ্মির, মিয়ানমার, সিরিয়া ও ইয়েমেনের নির্যাতিত মানুষের জন্য। এ জন্যই আমি ভালবাসি এরদোগানকে।
কথা বলতে বলতে চোখ ভিজে ওঠে হায়দারের। তিনি বলেন, মিয়ানমারে নৃশংসতার কারণে যেসব রোহিঙ্গা মুসলিম দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন তাদের জন্য সর্বান্তকরণে কাজ করে যাচ্ছে এরদোগানের নেতৃত্বে তুরস্ক।

এরদোগানের জন্য কেন তসবিহ? এ প্রশ্নের জবাবে হায়দার বলেন, এরদোগান একজন ধার্মিক মানুষ। আর তসবিহতো আমাদেরকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এরদোগানের কণ্ঠে আমি পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত শুনেছি। শুনেটি তার সুমিষ্ট স্বরের আযান। এভাবেই তাকে আমি আবিষ্কার করেছি।

এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বড় মসজিদ নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছেন রিসেপ তায়্যিপ এরদোগান। এসব কারণে তার প্রতি দিন দিন ভক্তি শ্রদ্ধা বেড়েছে হায়দারের।

তার এ কাজ দেখতে বাড়িতে ভিড় জমান বিপুল সংখ্যক মানুষ। তারা সবাই হায়দারের কাজের প্রশংসা করেন। এর মধ্যে ৮০ বছর বয়সী মুসলিম উদ্দিন বলেন, আমি হায়দারের এই কাজকে খুব পছন্দ করি। তার এ কাজের কারণে বিশ্বের অন্য নেতাদের ন্যায়বিচার ও মানবতার পক্ষে যথাযথ কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবে।

যুবক আরিফুল ইসলাম বলেছেন, তিনি এরদোগানের মতো হতে চান। কারণ এরদোগান ইসলাম, শান্তিকে ভালবাসেন। কাজ করেন মানবাধিকারের পক্ষে। অন্যদিকে হায়দারের বন্ধু রাসেল করিম বলেন, এই তসবিহ যদি এরদোগান গ্রহণ করেন তাহলে এটা হবে আমাদের জন্য এক বড় সফলতা। প্রমাণ হবে আমাদের ভালবাসার সত্যিকার প্রতিফলন ঘটেছে।

ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রয়েছে এরদোগানের বিপুল সংখ্যক ভক্ত। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুব সমাজ তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। বাংলাদেশী অনেক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মিডিয়ায় তাদের পেজে ব্যবহার করেন এরদোগানের ছবি।