এবার অন্তঃসত্ত্বাকে পেটাল পুলিশ, অভিযুক্ত কনস্টেবলকে প্রত্যাহার

1রাজশাহী প্রতিনিধিঃ ‘তুচ্ছ ঘটনাকে’ কেন্দ্র করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরা রেলওয়ে স্টেশনে কুলসুম নাহার রীনা নামে এক অন্তঃসত্ত্বা স্কুলশিক্ষিকাকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে জিআরপি পুলিশের এক কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় কনস্টেবল মোশাররফকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকবর হোসেন জানিয়েছেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় কনস্টেবল মোশাররফকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

রীনার পরিবারের অভিযোগ, ছোট ভাই মঈনের সঙ্গে আরনুরা স্টেশনের টিকেট চেকার সুমনের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রীনার উপর হামলা চালায় কনস্টেবল মোশাররফ। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহতাবস্থায় রীনাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়পত্র দেয়।

আহত রীনা কেন্দুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসাবে কর্মরত। তার স্বামী ঢাকায় কর্মরত এক্সিম ব্যাংক কর্মকর্তা সাইফুল আহম্মেদ।

আহত রীনার মা নুরুন নেসা জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার ছোট ছেলে মঈনের সঙ্গে আরনুরা স্টেশনের টিকেট চেকার সুমনের বাকবিতণ্ডার সূত্র ধরে রীনার উপর হামলার ঘটনা ঘটে।

তিনি জানান, মঈন দুই বন্ধুকে রিসিভ করতে স্টেশনে এলে টিকেট চেকার সুমন তার কাছে টিকিট দেখতে চান। মঈন সুমনকে বুঝিয়ে বললেও সুমন টিকিট দাবি করতে থাকেন। একপর্যায়ে বিবাদ বেঁধে গেলে কনস্টেবল মোশাররফ এসে মঈনকে পেটাতে শুরু করেন।

খবর পেয়ে মঈনের বোন রীনা ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি মোবাইল ফোনে হামলাকারী মোশাররফের ছবি তুলতে গেলে মোশাররফ ক্ষিপ্ত হয়ে তার হাতে থাকা মেটাল ডিটেকটর দিয়ে রীনার মাথায় কয়েকবার আঘাত করেন। এতে রীনা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা তাকে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকদের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী রীনার সিটিস্ক্যান করানো হয়। সোমবার সকালে চিকিৎসকরা তার পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে দেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, রীনাকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, তখন তার কপালে বেশকিছু আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ছাড়া তিনি বারবার বমি করছিলেন। তাই তার সিটিস্ক্যান করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। তার মাথার চামড়ার ভেতরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে মস্তিস্কে কোনো ক্ষতি হয়নি। তাই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে দুপুরে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

এদিকে, আরনুরা রেল স্টেশনের মাস্টার খাইরুল ইসলামের দাবি, রীনা তার ভাইকে মারধরের ঘটনায় কনস্টেবল মোশাররফকে জুতা খুলে মারতে উদ্যত হয়েছিলেন। তাই মোশাররফ ক্ষিপ্ত হয়ে রীনাকে আঘাত করে।

খবর পেয়ে রাজশাহী জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকবর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ বিষয়ে জানতে জিআরপি পুলিশ সুপার সিদ্দিকি তানজিলুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email