নির্ভেজাল বাঙালিত্বের তাগিদ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক: গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, এমপি দেশবাসীকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে আহ্বান জানান, ‘আসুন সকলে মিলে বাঙালিয়ানাকে আবার উজ্জীবিত করি। আমরা চাই নির্ভেজাল বাঙালিত্ব। আমাদের হাজার বছরের যে ঐতিহ্য, সেই ঐতিহ্যের বাঙালি সংস্কৃতি, চাল-চলন, পোশাক-পরিচ্ছদ, আচার-অনুষ্ঠান সবকিছুকে আমরা ধরে রাখতে চাই’।

মন্ত্রী মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) বিকেলে বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশেনের ব্যবস্থাপনায় রাজধানীর হাতিরঝিল লেকে আয়োজিত মহান স্বাধীনতা দিবস নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা ২০১৯ এর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ‘হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন আপাদমস্তক একজন বাঙালি। তাঁর কথা-বার্তায়, চাল-চলনে, পোশাক-পরিচ্ছদে এবং বাঙালির কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য-সবকিছুতে বাঙালিয়ানা ছিলো বঙ্গবন্ধুর বৈশিষ্ট্যের প্রধানতম দিক।
মন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালির যে নিজস্ব সংস্কৃতি তার অন্যতম হলো নৌকা বাইচ। গ্রামে, গঞ্জে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে নৌকা বাইচ বাঙালির অত্যন্ত প্রিয় একটি পর্ব। নৌকা বাইচ বাঙালিদের আলাদা আনন্দ দেয় এবং বাঙালির স্বতন্ত্র পরিচয় বহন করে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এই নৌকা বাইচ বিলুপ্ত হবার পথে। আমি আনন্দিত যে, বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশন নৌকা বাইচের ধারাকে ধরে রেখেছে এবং আমাদের ছেলে-মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে এই জাতীয় কর্মকান্ডে পাঠাচ্ছে। এজন্য আমরা বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সরকারের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি’।

মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে আরো যোগ করেন, ‘আমরা চাই বাঙালির নিজস্ব বৈশিষ্ট্য টিকে থাকুক। আমরা চাই পাশ্চাত্য সংস্কৃতি এসে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে যেনো ধ্বংস করে ফেলতে না পারে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা চান বাঙালির বাঙালিত্ব টিকে থাকতে হবে। এরপর আমরা অন্য সংস্কৃতি যা কিছু ভালো সেটা অমরা গ্রহণ করবো। কিন্তু আমাদের যাত্রাগান, ভাটিয়ালী, জারী গান, কবি গান, নৌকা বাইচ, হা-ডু-ডু, গোল্লাছুট-এ সংস্কৃতিগুলো রক্ষা করতে না পারলে আমাদের বাঙালিত্বই হারিয়ে যাবে। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মনে করেন এগুলোকে লালন-পালন করতে হবে, ধারণ করতে হবে। আমাদের সকলের বাঙালিয়ানাকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব রয়েছে’।
বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশনেকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা করা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন ‘নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতাকে আমরা গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমরা বাঙালিত্বকে টিকিয়ে রাখতে চাই’। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে রোইং ফেডেরেশন থেকে দাবীকৃত একটি সুন্দর স্পট হাতিরঝিলে করে দেয়া হবে।
পরে মন্ত্রী বেলুন উড়িয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা ২০১৯ এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
এর আগে বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশনের সভাপতি এ্যাডভোকেট মোল্লা মোঃ আবু কাওছার স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, মহান স্বাধীনতা দিবস নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা ২০১৯ এ ১১টি পুরুষ দল ও ৪টি মহিলা দল হাতিরঝিল লেকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।

Print Friendly, PDF & Email