আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন
‘আমরা ১ম সিগন্যাল দেখিনি, তাই স্টেশনে প্রবেশ ও দুর্ঘটনা’
নিজস্ব প্রতিবেদক |
কুমিল্লা ও আখাউড়া স্টেশনের মধ্যবর্তী আউটার বা ১ম সিগন্যাল না দেখার কারণে তূর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন তূর্ণার সহকারী লোকোমাস্টার (চালক) অপু দে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেল স্টেশনে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ভোর রাতে ঘটে যাওয়া ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৬জন নিহত ও শতাধিক আহত হন। ওই ঘটনার পর রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তূর্ণার চালক তাহের উদ্দিন ও সহকারী লোকোমাস্টার অপু দে অটো সিস্টেম বা প্যাডেলে ইট দিয়ে চেপে রেখে ঘুমিয়ে থাকার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

ওই দুইজনের বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ৯টায় অপু দে’র সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়।

তিনি দাবি করেন, একটি স্টেশনে বা ক্রস লাইনে ঢোকার আগে চারটি সিগন্যাল থাকে। আউটার ১ম সিগন্যাল, হোম, স্টাটারস ও ইমার্জিং সিগন্যাল। কিন্তু আমরা স্টেশনে ঢোকার আগে আউটার সিগন্যাল দেখিনি। পরে হোম সিগন্যাল দেখেছি। তবে ওই সিগন্যালটিকে আমরা মনে করেছিলাম ১ম সিগন্যাল।
‘১ম সিগন্যাল না দেখার কারণ হচ্ছে, ওই সিগন্যালের ওপর পর্যন্ত বালি জমা ছিল। ওইখানে ডাবল লাইনের কাজ চলছে। সাধারণত ১ম সিগন্যাল দেখলে স্টেশনে প্রবেশ করা যায় না। আমরা ১ম সিগন্যাল দেখিনি, তাই স্টেশনে প্রবেশ করি।’
অপু দে বলেন, দ্বিতীয় বা হোম সিগন্যাল দেখলে কোনোভাবেই স্টেশনে প্রবেশ করা যায় না। কিন্তু আমরা ওই হোম সিগন্যালকে ১ম সিগন্যাল মনে করি। যখন ব্রেক করি তখন স্টাটারস সিগন্যালে তূর্ণার ইঞ্জিন ঢুকে পড়ে। এরপর ইমার্জিং সিগন্যাল পার হয়ে উদয়নের কয়েকটি বগিতে আঘাত লাগে।
তবে রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বিতীয় বা হোম সিগন্যাল দেখার পর যদি ব্রেক করতো তাহলে এ সংঘর্ষের ঘটনা হতো না। তারা নিশ্চয়ই ঘুমিয়ে ছিলো। এখন দায় এড়াতে সিগন্যালকে দায়ী করছে।
ঘুমিয়ে থাকার বিষয়টি অপু দে অস্বীকার করে বলেন, ‘কন্ট্রোল থেকে আমাদের জানানো হয়নি যে, ওইখানে উদয়নকে ক্রসিং দেবে। অতি কুয়াশার জন্য ফগ সিগন্যাল দিতে হয়। ওই সিগন্যালও দেওয়া হয়নি। কন্ট্রোল থেকে কোনো ধরনের তথ্য আমাদের দেওয়া হয়নি। যার ফলে এ দুর্ঘটনা।’
তিনি পুরো দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে সিগন্যাল দেখতে না পাওয়া ও কন্ট্রোলারদের দায়িত্বে অবহেলাকে দায়ী করেছেন।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে চালক সিগন্যাল অমান্য করায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। তারপরও আমরা রেল মন্ত্রণালয় থেকে তিনটি, রেলওয়ে থেকে একটি এবং জনপ্রশাসন থেকে একটি করে মোট পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের চালক, সহকারী চালক এবং ট্রেনের গার্ড আবদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’