আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন
মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি না দিয়ে সরকার আইন ও বিচার ব্যবস্থাকে লাঞ্ছিত করেছে : বিএফইউজে
নিজস্ব প্রতিবেদক : আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ সব মামলায় জামিন পাওয়ার পরও মুক্তি না দিয়ে সরকার মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার, আইনের শাসন ও বিচার ব্যবস্থাকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করেছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের শ্যোন অ্যারেস্ট ও রিমান্ড আবেদন বাতিল ও বিএফইউজে সভাপতি শওকত মাহমুদের মুক্তি ও বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে এসব মন্তব্য করা হয়। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চ জামিন বহাল রাখার পরও শ্যোন অ্যারেস্ট আর রিমান্ডের নামে নিপীড়ন-নির্যাতন সাংবাদিক সমাজকে বিচলিত কর তুলেছে। সরকারের প্রভাবশালীদের এ জন্য একদিন জবাবদিহি করতে হবে এবং কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুদ্দিন হারুনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন― সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, বিএফইউজে মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব)-এর সহ-সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মুহসিন, বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ডিইউজের বাসস ইউনিট প্রধান আবুল কালাম মানিক, সাংবাদিক নেতা সাখাওয়াত ইবনে মইন চৌধুরী প্রমুখ। বিক্ষোভ সমাবেশ পরিচালনা করেন ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক শাহীন হাসনাত ।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, কয়েক দিন আগে আমরা সমাবেশ করে মাহমুদুর রহমানের মুক্তির জন্য প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ চেয়েছিলাম। প্রধান বিচারপতি মাহমুদুর রহমানের জামিন বহাল রেখে আইনের শাসন সমুন্নত রেখেছিলেন। কিন্তু সরকার মাহমুদুর রহমানের ওপর সীমাহীন জুলুম করছে। বিনা অপরাধে জেলে বন্দি করে রেখেছে প্রায় ৩ বছর।
তিনি বলেন, এই প্রেসক্লাবে অনেক সাংবাদিক নেতাকে বলতে শুনেছি যে, মাহমুদুর রহমান জামিন চায় না কেন। কিন্তু মাহমুদুর রহমান শেষ পর্যন্ত জামিন চেয়েছেন এবং পেয়েছেনও। তার পর তাকে একটি রাজনৈতিক মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট করার পর এখন ওই নেতারা কী বলবেন। এভাবে নিপীড়ন চালিয়ে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। তিনি ডেইলি স্টার সম্পাদকের বিরুদ্ধে হুমকি ও হয়রানিমূলক মামলারও প্রতিবাদ জানান।
বিএফইউজে মহাসচিব এম আবদুল্লাহ বলেন, মজলুম সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সব মামলায় জামিন পেয়ে যখন মুক্তির সন্ধিক্ষণে পৌঁছেন তখন বানোয়াট মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে সরকার মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার, আইনের শাসন ও বিচার ব্যবস্থাকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করেছে। সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চ জামিন বহাল রাখার পরও শ্যোন অ্যারেস্ট আর রিমান্ডের নামে নিপীড়ন-নির্যাতন সাংবাদিক সমাজকে বিচলিত কর তুলেছে। এজন্য সরকারের প্রভাবশালীদের একদিন জবাবদিহি করতে হবে, কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
তিনি বলেন, বিনা অপরাধে বিএফইউজের সভাপতি শওকত মাহমুদকে ছয় মাস ধরে আটক করে রাখা হয়েছে। তিনি সব মমলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর দুটি মামলায় নতুন করে চার্জশিট দাখিল করে মুক্তি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ডেইলি স্টার সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডজন ডজন মামলা করে তাকে গ্রেফতার ও হয়রানির অপচেষ্টা হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অস্তিত্ব রক্ষায় সারা দেশের সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ করে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া কোনো বিকল্প থাকবে না।
এম এ আজিজ বলেন, আফ্রিকার জঙ্গল ও সুন্দরবনের পশুরা যে স্বাধীনতা ভোগ করে বাংলাদেশের মানুষ আজ তেমন স্বাধীনতাও পাচ্ছে না। মাহমুদুর রহমানকে যেভাবে আটকে রাখা হয়েছে তা আইনের শাসনের প্রতি চরম অবজ্ঞা।
তিনি বলেন, শওকত মাহমুদ ও মাহমুদুর রহমানের মুক্তি, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও গণমাধ্যমের স্বাধিনতা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, মাহমুদুর রহমানকে যেভাবে আটকে দেওয়া হয়েছে তা বিচার ব্যবস্থার ওপর সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপ ছাড়া কিছুই নয়। কারণ আপিল বিভাগ তার জামিন বহাল রেখেছেন। তার পর মুক্তি না দিয়ে সরকার চরম অন্যায় ও অবিচার করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে শামসুদ্দিন হারুন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সাপের লেজ নিয় খেলা করছে। এ খেলার পরিণতি তাদের জন্য ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনবে।