'এখানে আপনাদের কাজ কী'

নোয়াখালীতে দ্বিতীয় শ্রেণির মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

নোয়াখালী প্রতিনিধি |

নোয়াখালী সদর উপজেলার কাদির হানিফ ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামে দ্বিতীয় শ্রেণীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে (৮) গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতা মোশারফ হোসেন কিরন সুধারাম থানায় তার মেয়েকে গণধর্ষণের বিষয়ে একটি মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন।

php glass

পরে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই)বিপুল কুমার ঘোষ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ছায়দুল হককে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) জুম্মার নামাজের পর সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে ঘটনার মীমাংসার নির্দেশ দেন। এনিয়ে ওই এলাকায় চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।

ksrm

ভিকটিম স্থানীয় মোশারফ হোসেন কিরনের শিশু কন্যা ও নিত্যনন্দনপুর নুরানী মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী।

ভিকটিমের মা আলেয়া বেগম জানান, সাবেক মেম্বার ছায়দুল হকের বাড়ি আমাদের প্রতিবেশী আবদুল জলিল হুক্কুর ছেলে মিরণ (২৭) কিছুদিন পূর্বে আমার শিশু কন্যাকে চকলেট হাতে দিয়ে খেলার অজুহাতে বাড়ির একটি পরিত্যাক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর সে বিভিন্ন সময়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে।

বিষয়টি প্রতিবেশী আবদুল খালেকের ছেলে সাহেদ ও মিরণের ছোট ভাই মিজান টের পেয়ে তারাও ঘটনাটি লোকজনকে জানিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শিশুটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে বুধবার দুপুরে সাহেদ ভিকটিমকে পুনরায় ধর্ষণ করলে সন্ধ্যায় পেট ব্যাথা শুরু হলে ভিকটিমের মায়ের জিজ্ঞাসায় সে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানায়।

ভিকটিম জানায়, প্রথমে মিরণ কাক্কু আমাকে চকলেট দেবে বলে ওই ভাঙা ঘরে নিয়ে খারাপ কাজ করে। এরপর সে মেলা দিন আমার সাথে কাতুকুতু খেলবে বলে খারাপ কাজ করে। পরে সাহেদ কাক্কু ও মিজান ক্কাকুও ওটা দেখে আমাকে ভয় দেখিয়ে খারাপ কাজ করে। তারা বলেছেন কাউকে জানালে আমাকে মেরে ফেলবে, তাই কাউকে বলতে ভয় লাগতো।

আলেয়া বেগম আরো জানান, ঘটনা জানার পর ভিকটিমের বাবা সুধারাম থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। সুধারাম থানার এসআই বিপুল কুমার ঘোষ রাতেই গিয়ে স্থানীয় সাবেক ইউপি (মেম্বার) ছায়দুল হককে বিষয়টি সালিশ বৈঠকে মীমাংসা করতে বলেন।

এদিকে, ঘটনাস্থলে সাংবাদিকরা গেলে সাবেক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা ছায়দুল হক ছাদু বলেন, এখানে আপনাদের কাজ কি? বিষয়টি সালিশ বৈঠকে মীমাংসা করতে পুলিশ আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আপনারা এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করবেন না।

কাদির হানিফ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহিম জানান, আমি ঘটনার বিষয়ে জানি। ভিকটিমের পরিবারকে থানায় মামলা করার নির্দেশ দিয়েছি। অতি-উৎসাহী কেউ ঘটনার ধামাচাপা দিতে চাইলে পুলিশ অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিপুল কুমার ঘোষের সাথে একাধিক বার চেষ্ট করেও কথা বলা যায়নি। সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নবীর হোসেন জানান, ঘটনাটি শুনেছি । তবে যতটুকু জানি এ বিষয়ে এখনো থানায় কোনো লিখিত দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email