জঙ্গি হামলার আশঙ্কা, সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার

নিজস্ব প্রতিবেদক।

দেশের যেকোনো স্থানে জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে এমন আশঙ্কা করছে পুলিশ। বিমানবন্দর, পুলিশের স্থাপনা, দূতাবাস এবং সব উপাসনালয়ের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে সারা দেশের পুলিশের ইউনিটগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি। এ ছাড়া শহর ও শহরতলি এলাকার ভাড়াটেদের তথ্য সংগ্রহ এবং স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং মাদ্রাসা ও এতিমখানার ওপর নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

জঙ্গি হামলা মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থান নিতে ১৯ জুলাই পুলিশের সারা দেশের ইউনিটপ্রধানদের সতর্ক থাকতে চিঠি পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। চিঠিতে বলা হয়েছে, সকাল ৬টা থেকে ৮টা বা সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১০টার মধ্যে হামলা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু হিসেবে পুলিশ সদস্য, পুলিশের স্থাপনা ও যানবাহন, বিমানবন্দর, দূতাবাস, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও মিয়ানমার বা এসব দেশের স্থাপনা ও ব্যক্তি এবং শিয়া ও আহমদিয়া মসজিদ, মাজারকেন্দ্রিক মসজিদ, মন্দির, চার্চ ও প্যাগোডাকে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, হামলাকারীর সম্ভাব্য বয়স হবে ১৫ থেকে ৩০ বছর। হাতে তৈরি সময় কিংবা দূরনিয়ন্ত্রিত গ্রেনেড, বোমা, ক্ষুদ্রাস্ত্র কিংবা ছুরি-চাপাতি দিয়ে হামলা হতে পারে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জঙ্গিরা পুলিশের পোশাক পরে তাদের স্থাপনায় প্রবেশ করতে পারে। তাই পোশাক পরা থাকলেও পুলিশ সদস্যদের পরিচয় নিশ্চিত হতে হবে।

পুলিশের অ্যান্টিটেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, বেঙ্গল উলায়াত বলতে সংগঠনটির বাংলাদেশ শাখা বোঝানো হয়েছে। গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং নিজেদের সদস্যদের উজ্জীবিত করতে বিভিন্ন সময়ে তারা এ ধরনের শাখা ঘোষণা করে থাকে। তাঁর মতে, আরবি জিলহজ মাসে হামলা করাকে জঙ্গিরা বিশ্বব্যাপী অধিকতর পুণ্যের কাজ বলে মনে করে। তাই এই মাসে সব সময়ই হামলার একটা আশঙ্কা থেকে যায়। মাসটি ঘিরে তাই সব সময়ই পুলিশ সদস্যদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

তবে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় গতকাল রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সব ইউনিটপ্রধান ও কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন। এতে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। সিটিটিসির উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করে সার্বিক দিক তুলে ধরেছেন।

পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, পল্টনের বোমা বিস্ফোরণটি জঙ্গিরা ঘটাতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন। যে ধরনের বিস্ফোরক ছিল, তা সাধারণত জঙ্গিরাই ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এখনো নিশ্চিত কোনো সূত্র তাঁরা পাননি।

পুলিশ কমিশনার বলেন, সিটিটিসি থেকে ডিএমপির সব উপকমিশনারকে আগেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও বিশেষ উদ্যোগ নিতে তাগাদা দেওয়ার জন্য সভা ডাকা হয়েছিল। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিয়ে নিয়মিত চেকপোস্ট বসাতে এবং নতুন ভাড়াটেদের তথ্য সংগ্রহ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ডিএন/পিএন/জেএএ/১২:৩৩পিএম/২৭৭২০২০১৪

Print Friendly, PDF & Email