এবি পার্টির ইফতারে রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক ও নাগরিক সমাজের সম্মেলন
বুরকিনা ফাসোয় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ২০: ৬৩ জিম্মি উদ্ধার, অভিযান চলছে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হোটেলের কাছে উৎসুক জনতার ভিড়। ছবি: এএফপিপশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোর রাজধানী ওয়াগাদুগুর একটি হোটেলে বন্দুকধারীদের চালানো হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছে। হামলাকারীরা হোটেলের ভেতর বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করেছে। আজ শনিবার সকালে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হোটেলে উদ্ধার অভিযান চলছে। এ পর্যন্ত ৬৩ জন জিম্মিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৩ জন আহত হয়েছে।
দেশটির যোগাযোগমন্ত্রী রেমি দান্দিজনো বলেন, হোটেলের ভেতরে কয়েকজন মারা গেছে। তবে তারা ঠিক কতজন, তা জানা যায়নি। ফ্রান্সের বিশেষ বাহিনীর সঙ্গে বুরকিনার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।
ওই হোটেলে জাতিসংঘের কর্মকর্তা ও পশ্চিমা দেশ থেকে আসা পর্যটকেরা থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি পর্যবেক্ষক দল বলছে, সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদা ইন ইসলামিক মাগরেব এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিবিসি ও এএফপির খবরে জানানো হয়, স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এ হামলা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বেশ কয়েকজন মুখোশ পরা বন্দুকধারী স্প্লেনডিড নামের ওই হোটেলে আচমকা হামলা চালায়। এর আগে হামলাকারীরা হোটেলের বাইরে গাড়িবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বুরকিনা ফাসোতে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জিল চিবোঁ জানান, জিম্মিদের মুক্ত করতে অভিযান চলছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, হোটেলের একটি অংশে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
বুরকিনা ফাসোর হাসপাতালের প্রধান রবার্ট সাঙ্গারে বলেন, হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছে।স্প্লেনডিড হোটেলের কাছে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। বুরকিনা ফাসোর ওই হোটেলে সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়। ছবি: এএফপি
জিহাদিদের নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণকারী একটি দল বলছে, ইসলামিক মাগরেবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জঙ্গি দল আল-কায়েদা হামলার দায় স্বীকার করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বন্দুকধারীরা প্রথমে হোটেলের কাছে কাপুচিনো ক্যাফেতে ঢোকে। ওই ক্যাফেটি সাধারণত জাতিসংঘের কর্মকর্তা ও পশ্চিমারা ব্যবহার করেন। বার্তা সংস্থা এএফপির এক কর্মীও হামলার সময় ওই ক্যাফেতে ছিলেন। তিনি বলেন, সেখানে বেশ কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে।
হোটেলটি বুরকিনা ফাসোর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছেই। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, হোটেলের ভেতর থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর ৭৫ সদস্য বুরকিনা ফাসোতে নিয়োজিত। মার্কিন সেনাবাহিনী বলেছে, হোটেলে চালানো অভিযানে ফ্রান্সের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তারা সহায়তা করতে প্রস্তুত।
বুরকিনা ফাসোতে নিয়োজিত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জিল চিবোঁ বলেন, স্থানীয় সময় আজ শনিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত সেখানে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
গত নভেম্বর মাসে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন এক অভিজাত হোটেলে বিদেশিসহ ১৭০ জনকে জিম্মি করে বন্দুকধারীরা। নয় ঘণ্টা পর এ জিম্মিদশার অবসান ঘটে। এ ঘটনায় অন্তত ২৭ জন নিহত হয়। এ হামলার দায়দায়িত্ব স্বীকার করে জঙ্গি দল আল-কায়েদা ইন ইসলামিক মাগরেব।