মিশরের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট ড: মুরসির ইন্তেকাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি আদালতে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন। গতকাল মিসরের একটি আদালতের এজলাসেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। মিসরের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন মুরসির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

মিসরের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিচারকের কাছে কথা বলার অনুমতি চাইলে তাকে কথা বলতে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। এ সময় তিনি বুকে ব্যাথা অনুভব করেন। এক পর্যায়ে তিনি হার্টঅ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। খবরে বলা হয়, মুরসির লাশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেখানে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। মুরসির ছেলে আহমদ নাজাল ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি লেখেন, আমার পিতা আল্লাহর কাছে চলে গিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে আরব বসন্তের জেরে মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠে বিশাল গণঅভ্যুত্থান। এতে পদচ্যুত হন হোসনি মোবারক।
২০১২ সালের জুন মাস থেকে ২০১৩ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত মিসরের প্রেসিডেন্ট পদে ক্ষমতায় ছিলেন মোহাম্মদ মুরসি। শেষ পর্যন্ত এক সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি ক্ষমতাচ্যূত হন।
ক্ষমতা থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরে জনাব মুরসিকে গ্রেফতার করে বন্দি রাখা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, দেশদ্রোহিতা, গুপ্তচরবৃত্তি, জেল থেকে পালানোর চেষ্টা ও সন্ত্রাসসহ একাধিক অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে সামরিক সরকার।

২০১৩ সালে মুরসির নেতৃত্বাধীন মুসলিম ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ করা হয়। এর হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয় এবং বিভিন্ন অভিযোগে অনেককে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেয়া হয়। মুরসির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি অর্থের বিনিময়ে কাতারের কাছে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নথি পাচার করেছেন। ২০১৪ সালে তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছিল। ২০১৫ সালে বিচারের শেষে মুরসিকে মৃত্যুদণ্ড দেয় মিসরের আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে পালটা আবেদন জানান প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট। ২০১৬ সালে আদালতের পূর্বতন রায় খারিজ হয়। ২০১৬ সালের জুন মাসে তথ্য পাচারের এ মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন নিম্ন আদালত। আদালত দেশের গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচারের অভিযোগে মুরসিকে যাবজ্জীবন মৃত্যুদন্ডাদেশদেন। সূত্র : বিবিসি ও ও আহরাম অনলাইন।

Print Friendly, PDF & Email