শিরোনাম :

  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

ঢাকায় চোখের পানিতে বিদায় জানানো হলো প্রিয় ওস্তাদকে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

হেফাজত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে ঢাকায় শেষবারের মতো দেখতে ফরিদাবাদ মাদ্রাসায় হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে।

শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে গেন্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতাল থেকে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসা জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদে আল্লামা শফীর কফিন নেয়া হয়।

সেখানে সর্বজন শ্রদ্ধেয় এ আলেমকে শেষবারের মতো দেখতে হাজারও মানুষ জড়ো হয়। একনজর দেখার জন্য মাদ্রাসা মাঠে দীর্ঘক্ষন লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় তাদের।

চোখের পানিতে বিদায় জানাচ্ছেন দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত হওয়া এ আলেমকে।

আলেমরা বলছেন, আল্লামা শফীর শূন্যতা পূরণ হবার নয়। তার মৃত্যুতে একটি শতাব্দীর মৃত্যু হয়েছে।

হেফাজত আমিরের কফিন নিয়ে জামিয়া ফরিদাবাদ থেকে শনিবার ভোরে হাটহাজারীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়া হয়।

শনিবার দুপুর দুইটায় প্রিয় প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসায় আল্লামা শফীর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

দেশের মাদ্রাসা শিক্ষার ইতিহাসের অন্যতম এক নাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী। কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে এম এ সমমানের মর্যাদা আদায়ে তিনি ছিলেন প্রধান অগ্রপথিক।

বিশ্বের আনাচে-কানাচে আল্লামা আহমদ শফীর ছাত্র, শিষ্য, মুরিদ, ভক্ত ও অনুসারী রয়েছে।

আল্লামা শফী পাঁচ সন্তানের জনক। দুই ছেলে তিন মেয়ে। বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ, ছোট ছেলে মাওলানা আনাস মাদানি।

আল্লামা শফী আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০১০ সালে হেফাজতে ইসলাম নামে একটি ধর্মীয় সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৮৬ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক পদে যোগ দেন আহমদ শফী। এরপর থেকে টানা ৩৪ বছর ধরে তিনি ওই পদে ছিলেন।

লেখালেখিতেও রয়েছে তার বিশেষ অবদান। বাংলা ও উর্দু ভাষায় তার রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ২৫টি।

তার লেখা বইয়ের মধ্যে রয়েছে; বাংলা ভাষায়- হক ও বাতিলের চিরন্তন দ্বন্দ্ব, ইসলামী অর্থ ব্যবস্থা, ইসলাম ও রাজনীতি, সত্যের দিকে করুন আহ্বান, সুন্নাত ও বিদ-আতের সঠিক পরিচয় এবং উর্দু ভাষায়- ফয়জুল জারি (বুখারির ব্যাখ্যা), আল-বায়ানুল ফাসিল বাইয়ানুল হক ওয়াল বাতিল, ইসলাম ও ছিয়াছাত এবং ইজহারে হাকিকাত।

জীবনের শেষ দিনগুলোতেও আল্লামা আহমদ শফী করোনা সংকট, বিশ্ব পরিস্থিতি, ইসরাইল-আরব আমিরাত চুক্তিসহ নানা বিষয় নিয়ে নিয়মিত বিবৃতি ও দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়ে দেশ ও জাতি ও সরকারকে সতর্ক করে আসছিলেন।