আসামিকে আদালতে তোলার আগে মিডিয়াতে হাজির নয় : হাইকোর্ট

High courtনিজস্ব প্রতিবেদকঃ আদালতে হাজিরের আগে কোনো আসামিকে (জঙ্গিকে) প্রচার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন করা যাবে না, এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শকের প্রতি (আইজিপির) আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই কাজ থেকে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের বিরত রাখতে পুলিশ প্রধানকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

গাজীপুরে ধরা পড়া জঙ্গি মামনুর রশিদ ওরফে জাহিদের ডেথ আপিল খারিজ করে বৃহস্পতিবার এমন র্পযবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এসএম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মনিরুজ্জামান কবীর। আদালতের রায় ও পর্যবেক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেখ মনিরুজ্জামান কবীর।

২০০৯ সালে গাজীপুরে বোমাসহ আটক জঙ্গি মামুন ওরফে জাহিদকে বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, আশা করি কোনো আসামিকে প্রচার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে আদালতে হাজির করার আগে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থিত করা থেকে আইন-শৃংখলা বাহিনী যেন বিরত থাকে। সে জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। মামুনের মামলায় তদন্তে উদাসীনতার কারণে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশ মহাপরিদর্শক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা হাইকোর্টের।

এছাড়াও এ ঘটনায় তখনকার গাজীপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বোমা বা গ্রেনেডসহ জাহিদকে হাজির করে সংবাদ সম্মেলন করা দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ ছিলো বলে অভিহিত করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

২০০৯ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেএমবির সদস্য মামুনুর রশিদ ওরফে জাহিদকে টঙ্গীর হরতইল গ্রামের একটি ভাড়া বাসা থেকে ৫টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ডেটোনেটর এবং বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ আটক করে পুলিশ। পরে গাজীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার আব্দুল বাতেনের কার্যালয়ে গ্রেনেডসহ মামুনকে সংবাদ সম্মেলনে হাজির করেন।

সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে মামুন টেবিলে থাকা গ্রেনেড ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এ সময় গ্রেনেড বিস্ফোরণে সাংবাদিক, পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনায় করা মামলায় ২০১৩ সালে ১৩ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ মামুনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট মামুনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দেন।

Print Friendly, PDF & Email