• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

দুই সন্তান হত্যায় মাহফুজার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন

002নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর রামপুরায় দুই শিশু খুনের ঘটনায় তাদের বাবার করা মামলায় মাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিলি বিভাগের উপ কমিশনার আনোয়ার হোসেন শুক্রবার বলেন, ‘দুই শিশুর মা মাহফুজা মালেক জেসমিনকে আজ আদালতে তোলা হচ্ছে। তাকে দশ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হচ্ছে।’
আগের দিন র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী নিজেই তার সন্তানদের শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

এরপর বৃহস্পতিবার রাতে শিশু দুটির বাবা আমানুল্লাহ রামপুরা থানায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
শিশু দুটির জানাজা ও দাফনের পর বুধবার আমানুল্লাহ ও জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে ঢাকায় নিয়ে এসেছিল র‌্যাব।

এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘মানসিকভাবে সুস্থ’ অবস্থায় হত্যার দায় স্বীকার করেন শিশু দুটির মা।
‘ছেলেমেয়ের লেখাপড়া ও ভবিষ্যত নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এর এক পর্যায়ে ছেলেমেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।’

তবে মাহফুজার ভাই জাকির হোসেন সরকার র‌্যাবের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘আমার বোন কাউকে হত্যা করতে পারে না। সে তার সন্তানদের অনেক ভালবাসতো।’ এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে তিনি বলেন, ‘র‌্যাব বললেও আমার বোন তো নিজ মুখে সবার সামনে বলেনি যে সে তার সন্তানদের হত্যা করেছে।’

সম্পর্কে চাচাত ভাই-বোন আমানুল্লাহ-জেসমিন দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে বড় নুসরাত আমান অরণী (১৪) ভিকারুননিসানূন স্কুলে পড়ত, ছোটটি আলভী আমান (৬) পড়ত হলি ক্রিসেন্ট স্কুলে।

গত সোমবার রামপুরা বনশ্রীর বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

চাইনিজ রেস্তোরাঁ থেকে আনা খাবার খেয়ে শিশু দুটির মৃত্যুর সন্দেহের কথা পরিবারের পক্ষ থেকে সে সময় বলা হয়েছিল। তবে পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তে মেলে হত্যার আলামত।

মাহফুজার স্বীকারোক্তির বরাতে র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি মেয়ে অরণী যখন গৃহ শিক্ষকের কাছে পড়ছিল, তার মা ও ভাই তখন শোবার ঘরে ঘুমাচ্ছিল। গৃহ শিক্ষক চলে যাওয়ার পর মাহফুজা তার মেয়েকেও ঘুমাতে ডাকেন।

অরণী বিছানায় যাওয়ার পর মাহফুজা তার ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে মেয়ের শ্বাসরোধ করেন। এক পর্যায়ে ধস্তাধস্তিতে মেয়ে বিছানা থেকে পড়ে যায়। মেয়ের মৃত্যু হয়েছে নিশ্চিত হওয়ার পর ছেলেকেও একইভাবে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে হত্যা করেন।

মানসিকভাবে সুস্থ একজন মা লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে কেন নিজের হাতে দুই সন্তানকে হত্যা করতে যাবেন, সে প্রশ্নের সদুত্তর র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে মেলেনি।
এ ঘটনায় দুই শিশুর বাবা পোশাক ব্যবসায়ী আমানুল্লাহর সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।

Print Friendly, PDF & Email