ওসি মোয়াজ্জেমকে পুলিশ খুঁজে না পেলেও হাইকোর্টে জামিন চেয়েছে

আদালত প্রতিবেদকঃ ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ ভিডিওতে ধারণ এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে আইসিটি আইনে দায়ের মামলায় আগাম জামিন চেয়ে সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন হাইকোর্টে আবেদন করেছেন।
বুধবার (২৯ মে) বিচারপতি মো. হাবিবুল গণি ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ওসি মোয়াজ্জেমের পক্ষে আবেদনটি করেন আইনজীবী সালমা সুলতানা।
এর আগে গত সোমবার (২৭ মে) এ মামলায় ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।

ওইদিন (২৭ মে) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে আইসিটি মামলায় ১২৩ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন। পরে ওসির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। পরে শুনানি শেষে বিচারক গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ দেন।
গত ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামালাটি দায়ের করেন। এরপর বিচারক মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন দেওয়া হয়। গুরুতর দগ্ধ নুসরাত পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হার মানেন। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email