• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

মন্ত্রী জামাতা ডা. রাজনের রহস্যজনক মৃত্যু, ছবি তুলতে গিয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছিত

dn reporterনিজস্ব প্রতিবেদক ঃ খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের জামাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক রাজন কর্মকারের লাশের পাশে স্বজনের আহাজারির ছবি মুঠোফোনে ধারণ করতে গিয়ে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার অপরাধ বিভাগের সাংবাদিক ইমন রহমান। এ সময় তার মুঠোফোনটি কেড়ে নেয় মন্ত্রী পরিবারের সঙ্গে থাকা সাঙ্গপাঙ্গরা। পরে শেরেবাংলা নগর থানার কনস্টেবল শামীমের কাছে মুঠোফোনটি দিয়ে থানার ওসির কাছে পাঠায়। সোমবার দুপর দেড়টায়  রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে এ ঘটনা ঘটে।

ইমন রহমান জানান, মন্ত্রী জামাতা রাজনের মৃত্যুর সংবাদের ফলোআপ নিউজ করার উদ্দেশ্যে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে যান। সেখানে রাজনের লাশ ছিল। দুপুর দেড়টার দিকে মন্ত্রীর স্বজনেরা মর্গে প্রবেশ করে। এ সময় স্বজনের আহাজারির ছবি মুঠোফোনে ধারণ করলে তাদের সঙ্গে থাকা সাঙ্গপাঙ্গরা হামলে পরে। ৭/৮ জন চার দিক থেকে ঘিরে ধরে প্রথমে মুঠোফোনটি কেড়ে নেয়। পরে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর ক্ষিপ্ত হয়ে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে। মুঠোফোনটি একজন ছুড়ে ফেলতে যায়। পরে অপর একজন ঠেকায়। এ সময় মুঠোফোনটি ঘটনাস্থলে থাকা শেরেবাংলা নগর থানার কনস্টেবল শামীমকে দিয়ে তারা বলেন ওসির কাছে নিয়ে যেতে। শামীম মুঠোফোনসহ ইমনকে শেরেবাংলা নগর থানায় নিয়ে যায়। পরে থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ মুঠোফোনের ছবিগুলো মুছে ফেলে ইমনকে ফোন ফেরত দেয়। হামলাকারীদের কাউকেই ইমন চেনে না।

ইমন আরও বলেন, ‘থানায় যাওয়ার পথে ওই কনস্টেবলকে ০১৭৭৪৯৭৬৪৯৭ নম্বর থেকে ফোন করে বলেন মন্ত্রী ওসির সঙ্গে কথা বলেছেন। ফোন যেন ওই সাংবাদিক না পায়। পরবর্তীতে দেশ রূপান্তর থেকে এই নম্বরে ফোন করলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

শেরে বাংলা নগর থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মুঠোফোনের ছবি গুলো ডিলিট করে ওই সাংবাদিককে ফোনটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরাতো ফোন নেইনি। মন্ত্রীর স্বজন পরিচয় দিয়ে মুঠোফোনটি আমাদের কাছে দিয়েছে।’

উল্লেখ্য, গত রবিবার ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের জরুরী বিভাগে রাজনকে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রাজনের সহকর্মীদের দাবি, অতীতেও স্ত্রীর নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ হয় রাজন। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে লাশের ময়নাতদন্তের দাবি করে তারা। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়াই খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের পরিবার লাশ নিতে চাইলে বাধা দেয় রাজনের সহকর্মী চিকিৎসকেরা। পরে শেরে বাংলা নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করে রাজনের পরিবার। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে রাজনের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়।

 

Print Friendly, PDF & Email