বাংলাদেশের গণমাধ্যম কিছু বণিকগোষ্ঠীর হাতে চলে গেছে : তথ্যমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক: গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় যুক্তরাজ্যের তুলনায় বাংলাদেশ এগিয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) লন্ডনে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমের চেয়ে অনেক বেশি স্বাধীনতা ভোগ করে।’

এদিকে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রিপোর্টাস উইথ আউট বর্ডারস এর ২০১৯-এর প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় যুক্তরাজ্যের অবস্থান ৩৩ এবং বাংলাদেশের অবস্থান চার ধাপ নেমে ১৫০তম।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রথমত, এই যে ইনডেক্সগুলো তৈরি করা হয়, সেগুলো কোন সূত্র থেকে তথ্য নিয়ে করা হয় আমি তা জানি না। বাংলাদেশের পুরো গণমাধ্যম বর্তমানে যে স্বাধীনতা ভোগ করে, ইউকে-তেও অতো স্বাধীনতা সবক্ষেত্রে ভোগ করে না।’

যুক্তরাজ্যে ভুল সংবাদ পরিবেশনের জন্য কয়েকটি গণমাধ্যম বন্ধ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ভুল বা অসত্য সংবাদ পরিবেশনের জন্য ইউকে’তে জরিমানা গুনতে হয় সংবাদ মাধ্যমগুলোকে, যেটা বাংলাদেশে করা হয় না। বাংলাদেশে ভুল, অসত্য কিংবা ফেব্রিকেটেড সংবাদ পরিবেশনের কারণে কোনও পত্রিকা বন্ধ হয় না।’

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের কারণে সাংবাদিকদের সেল্প সেন্সর এবং রাজনীতিক ও গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক সাংবাদিকদের হুমকির অভিযোগের ব্যাপারে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেটি দু-একজন হয়তো বলতে পারেন। তবে তারা সেটা বহুদিন ধরে বলে আসছেন। সত্য হচ্ছে, বাংলাদেশের গণমাধ্যম পুরোপুরি স্বাধীনতা ভোগ করে। ইউকে’তে আইনের প্রয়োগ আছে। আমাদের দেশে আইনের প্রয়োগগুলো ঠিক সেভাবে হয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলছি না যে সাংবাদিকদের ওপর কেউ কেউ যে খবরদারির চেষ্টা করে না। সেটি যে হয় না বা একেবারেই কোনোভাবেই কোনও জায়গা থেকে হয় না বা হচ্ছে না, তা আমি বলবো না। আমাদের দেশে গণতন্ত্রের চর্চাটাই সবসময় নিরবচ্ছিনভাবে হয়নি। এদেশে গণতন্ত্রের চর্চাটাই হচ্ছে কয়েকশ বছর ধরে। এখানে স্বাধীনতা যেমনি আছে, তেমনি আইনেরও প্রয়োগ আছে।’

দেশের গণমাধ্যমের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেছেন, ‘গণমাধ্যম কিছু বণিকগোষ্ঠীর হাতে চলে গেছে। ফলে তারা চাইলেও সেই বণিক গোষ্ঠীর সমালোচনা করতে পারে না অনেক ক্ষেত্রে। সেই বণিক গোষ্ঠী অনেক সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে। কিন্তু এটার স্বাধীনতা রক্ষায় যারা এর পেছনে অর্থলগ্নি করেছে, তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ না করে কীভাবে কাজ করা যায় সেটিও গুরুত্বপূর্ণ।’

উল্লেখ্য, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে ১০ জুলাই থেকে লন্ডনে শুরু হতে যাওয়া সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাজ্য সফরে রয়েছেন তথ্যমন্ত্রী।

সূত্র: বিবিসি

Print Friendly, PDF & Email