• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

বগুড়ায় সাংবাদিক সমাবেশ: গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়া মুক্তি পেলেই গণমাধ্যমে দুর্যোগের অবসান হবে

dav

বগুড়া অফিসঃ গণমাধ্যমে বিরাজমান ভয়াবহ সংকট ও দুর্যোগের অবসান ঘটাতে হলে দেশে গণতন্ত্র ফেরাতে হবে এবং গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। সাংবাদিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে অধিকার আদায় করতে হবে। তা নাহলে দেশে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বলে কিছু অবশিষ্ট থাকবে না। রবিবার বগুড়ায় এক সাংবাদিক সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে নেতৃবৃন্দ এ কথা বলেন। সমাবেশে সারাদেশে সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতনের প্রতিবাদ, বন্ধ মিডিয়া খুলে দেওয়ার দাবি এবং নবম ওয়েজ বোর্ড সংশোধনের দাবীতে ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন নেতারা। বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই ঘোষণা দেন। এসময় তিনি ভারতের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষরিত চুক্তির কঠোর সমালোচনা করেন। সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র সভাপতি মির্জা সেলিম রেজা’র সভাপতিত্বে স্থানীয় একটি মোটেলে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব এম আবদুল্লাহ।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, আওয়ামীলীগ কখনোই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলোনা। স্বাদীনতার পরই তারা দেশের সব পত্রিকা বন্ধ করে মাত্র চারটি দৈনিক পত্রিকা রেখেছিল। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেও দেশের সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল আওয়ামীলীগ। তারা আমারদেশ বন্ধ করেছে। দিগন্ত টেলিভিশন, চ্যানেল ওয়ান, ইসলামী টিভিসহ অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করেছে। প্রতিনিয়ত সারাদেশে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। অথচ একটি ঘটনারও বিচার হচ্ছেনা। এক শ্রেণির সাংবাদিকের অতিমাত্রার দালালীর কারনে সাংবাদিক সমাজ ন্যায় বিচার থেকে বি ত হচ্ছে। তিনি বলেন, ভারতের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্প্রতি স্বাক্ষরিত চুক্তি সম্পর্কে তিনি বলেন, তিস্তার খবর নাই, অথচ ফেনী নদীল পানি ওপারে চলে গেল। গোপনে ভারতকে সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের চুক্তি করা হলো। আর কিছু দেয়া বাঁকি থাকলোনা। বিনা ভোটে ক্ষমতায় বসানোর পুরস্কার হিসেবে ভারতকে সবকিছু দিয়ে দিচ্ছে আওয়ামীলীগ। তিনি বলেন, সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার করতে হবে। সারাদেশ সফরের পর ঢাকায় মহাসমাবেশ করে নবম ওয়েজ বোর্ড সংশোধনের দাবি জানানো হবে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে এম আবদুল্লাহ বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। ওয়েজবোর্ড দিয়েছিলেন। আজ গণমাধ্যমের সুহৃদ বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দী রেখে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আমরা অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানাই।
তিনি বলেন, সারাদেশে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাংবাদিক ছাঁটাই করা হচ্ছে। ছাঁটাইকৃত সাংবাদিকরা বিএনপি কিম্বা জামায়াত সমর্থক নয়। তারা সরকারেরই সমর্থক। এতে গোটা গণমাধ্যম জুড়ে ভয়াবহ অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। মাসের পর মাস বেতন বকেয়া। দশ বছরে ৩৭ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। প্রতি মাসে ১৫ থেকে ২০ জন সাংবাদিক নির্যাতিত হচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে পারে না। সর্বাত্মক লড়াইয়ের মাধ্যমে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে বলে উল্লেখ করেন এম আবদুল্লাহ।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে’র নির্বাহী সদস্য সৈয়দ ফজলে রাব্বী ডলার, ড. সাদেকুল ইসলাম স্বপন, বগুড়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রেজাউল হাসান রানু, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার সাবেক সভাপতি মতিয়ুল ইসলাম সাদী, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র সাধারণ সম্পাদক গণেশ দাস, আলহাজ্ব মমিনুর রশিদ সাইন, এফ শাহজাহান, বাদল চৌধুরী, হারুনুর রশিদ তালুকদার, রাহাত রিটু, আবুল কালাম আজাদ, ইনছান আলী শেখ, আব্দুল ওয়াদুদ প্রমূখ।

Print Friendly, PDF & Email