ফ্যাসিবাদ বিরোধীদের বিভেদ পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের লাভবান করবে – খেলাফত মজলিস
'ছিল বিড়াল, হয়ে গেল রুমাল!'
করোনাকালে বদলে যাওয়া ভারতীয় মিডিয়া
জয়ন্ত চক্রবর্তী, কলকাতা|
লকডাউনের একমাসে কার্যত সম্পূর্ণ বদলে গেল ভারতীয় মিডিয়ার চরিত্র। ওয়ার্ক ফ্রম হোম শব্দটি এতদিন মিডিয়ার কাছে ছিল নিতান্তই আভিধানিক। লকডাউন শিখিয়ে দিল ওয়ার্ক ফ্রম হোম কাকে বলে। বেশিরভাগ সংবাদপত্রের সাংবাদিকই এখন ঘরে বসে কাজ করছেন। রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন। খবরের কাগজের অফিসে থাকছেন মুষ্টিমেয় সাংবাদিক, যাঁরা পাতা সাজাচ্ছেন, বিন্যাস করছেন।
খবরের কাগজের ফিল্ড রিপোর্টার কিছু বের হচ্ছেন। সংখ্যায় তাঁরা খুব কম। টেলিভশনের সাংবাদিকরা, বিশেষ করে রিপোর্টাররা বিট এ বের হচ্ছেন রীতিমতো মাস্ক আর গ্লাভস পরে। তবে, চ্যানেলগুলিও পালা করে কর্মী আনছে। লকডাউন কেটে গেলে কোটি সংস্থা আগের অবস্থায় ফিরবে কে জানে? মুদ্রিত সংস্করণের থেকে ডিজিটাল সংস্করণে জোর দেবে নাতো খবরের কাগজগুলি? তা যদি হয়, নিশ্চিতভাবেই কাজ হারাবেন বেশ কিছু সাংবাদিক -অসাংবাদিক কর্মী।
প্রায় একহাজার সদস্য সম্বলিত ইন্ডিয়ান আন্ড ইস্টার্ন নিউসপেপার সোসাইটি ইতিমধ্যেই প্রমাদ গুনে সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে, সংবাদ পত্র মুদ্রণ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে কর ছাড়ের জন্যে, নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে শুল্ক কমানোর আর্জিও তারা জানিয়েছে। বড় কর্পোরেট পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে চলা মিডিয়াগুলো হয়তো এই অবস্থা সামলে নেবে। কিন্তু কি হবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি মিডিয়া গোষ্ঠীগুলির।
ভুবনেশ্বরে আর্থিক কেলেঙ্কারির দায়ে জেলবন্দি বিশিষ্ট সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায় সম্প্রতি স্ত্রী কস্তুরী চট্টোপাধ্যায় এর মাধ্যমে ফেইসবুকে একটি লেখায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে এই অবস্থায় বৃহৎ পুঁজির জাতীয় মিডিয়া গোষ্ঠী এবং আঞ্চলিক মিডিয়া গোষ্ঠী সরকারি বিজ্ঞাপন পাওয়ার মোহে নতজানু হবে কেন্দ্রীয় অথবা আঞ্চলিক সরকারের কাছে। তাই যদি হয়, তাহলে তা হবে ভারতীয় মিডিয়ার জন্যে দুর্দিন।
এই করোনা কাণ্ডের মধ্যে যে সাংবাদিকরা জীবন তুচ্ছ করে কাজ করছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁরা কেউ করোনা আক্রান্ত হলে দশ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমার ব্যবস্থা করেছে। এই টুকুই যা স্বান্তনা। লকডাউন উঠে গেলে সবার আগে যে পরিবর্তন দেখা যাবে তা হবে ভারতীয় মিডিয়ায়। মিডিয়ার অবস্থা অনেকটা হবে এইরকম – ছিল বিড়াল, হয়ে গেল রুমাল!।