• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সাগর-রুনীর খুনিরা কাদের ‘মেন’ বা কোন মাফিয়ার আশ্রয়ে তা সাংবাদিক সমাজ জানতে চায়

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকারীদের দোসররা সরকারের মধ্যেই অবস্থান করছে বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, কোন মাফিয়া খুনিদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে কিনা বা খুনিরা কাদের ‘মেন’ সাংবাদিক সমাজ তা জানতে চায়। অবিলম্বে সাগর-রুনির হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দাবি জানান নেতারা।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র যৌথ উদ্যোগে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী সাংবাদিকদের এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি করেন সাংবাদিক নেতারা। বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে’র ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএফইউজে’র মহাসচিব নূরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, সহ-সভাপতি মোদাব্বের হোসেন ও ওবায়দুর রহমান শাহীন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোরসালিন নোমানী, সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, বিএফইউজে’র কোষাধ্যক্ষ খায়রুল বাসার, ডিইউজে’র সহ-সভাপতি বাছির জামাল, বিএফইউজে’র প্রচার সম্পাদক মাহমুদ হাসান, নির্বাহী সদস্য একেএম মহসীন ও জাকির হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক কায়কোবাদ মিলন, ডিইউজে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সাজু, নির্বাহী সদস্য জেসমিন জুঁই ও আবদুল হালিম। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন অর্পণা রায়, মাজহারুল ইসলাম ও শাখাওয়াত হোসেন মুকুল।
বিক্ষোভ সমাবেশ সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ বলেন, সাগর রুনির হত্যার ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। খুনিদের গ্রেফতার করা হয়নি। হত্যাকা-ের তদন্তের জন্য র‌্যাব এ পর্যন্ত ৭৮ বার সময় নিয়েছে। তিনি প্রধান বিচারপতির উদ্দেশ্যে বলেন, তদন্তের জন্য র‌্যাবকে আর সময় দেয়া উচিত নয়। শওকত মাহমুদ বলেন, এই তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতার জন্য এই হত্যাকা-ের সাথে সরকারের কেউ কেউ জড়িত আছে কিনা তা নিয়ে দেশবাসী সন্দেহ করছে। একদিন তাদের বিচার করা হবে বলে মন্তব্য করেন শওকত মাহমুদ। স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়ার বীর উত্তম খেতাব কেড়ে নেয়ার সমালোচনা করে শওকত মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।
বিএফইউজে’র সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, সাগর-রুনি দম্পতির হত্যার ৭৮ হাজার ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও খুনিদের ধরা হয়নি। ৭৮ বার সময় নেয়া হয়েছে। অথচ ৪৮ ঘন্টার মধ্যে খুনিদের ধরার কথা বলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সাগর-রুনীর খুনীরা কোন মাফিয়ার আশ্রয়ে আছে, কিংবা খুনিরা কার ‘মেন’ তা সাংবাদিক সমাজ জানতে চায়। এম আবদুল্লাহ বলেন, গত ১২ বছরে ৪১ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। সাংবাদিকদের শীর্ষ নেতা রুহুল আমিন গাজী ও সিনিয়র সাংবাদিক সাদাত হোসেনকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বিএফইউজে সভাপতি এই সব হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেন। একই সাথে দ্রুত কারারুদ্ধ সাংবাদিকদের মুক্তি দাবি করেন।

বিএফইউজে’র মহাসচিব নূরুল আমিন রোকন বলেন, সাগর-রুনির হত্যার বিচার একদিন হবে, সেদিন বেশি দূরে নয়।

এম. এ আজিজ বলেছেন, সাগর-রুনির হত্যার পর আমরা অনেকবার দাবি করেছি খুনিদের গ্রেফতার করুন। তখন তারা দেশেই দৃশ্যমান ছিল। কিন্তু তখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি বা করতে দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, দেশ এখন একটি মাফিয়া রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেছেন, সাগর-রনির হত্যার বিচার পাইনি, এখন আর বিচার চাই না। আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় চাই। কারারুদ্ধ সাংবাদিক নেতাদের মুক্তি দাবি করেন ইলিয়াস খান। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেছেন, দেশের জনগণ জানে কারা এই হত্যাকান্ডে জড়িত। সরকারের লোকেরা জড়িত বলেই এই হত্যাকা-ের বিচার হচ্ছে না।

বিএফইউজের কাউন্সিলর এইচ এম আল-আমীনের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ডিআরইউর সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, ইলেকশন রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কাজী জেবেল, ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সহসভাপতি নাসিম শিকদার, ডিইউজে নেতা শিকদার আলমগীর, সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের সভাপতি এইচ এম দেলোয়ার, সদস্য জিয়াউর রহমান, সেলিম কবীর, অর্পনা রায়, মাজহারুল ইসলাম নির্যাতিত সাংবাদিক ও ওয়ার্ল্ড নিউজের সম্পাদক সাগর চৌধুরী, বিএফইউজের কাউন্সিলর দৈনিক অন্য দিগন্তের সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদ, বিপ্লব শিকদার, মিয়া আবদুল হানান, আবদুর রহীম তালুকদার, সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল আহসান, ডিইউজে সদস্য কামাল হোসেন, ওবায়দুল কবীর প্রমুখ।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Print Friendly, PDF & Email