আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন
জেইউবি’র সাধারণ সভায় এম আবদুল্লাহ
প্রেস কাউন্সিল আইনের সংশোধনী ও তথ্য পরিকাঠামো পরিপত্র বাতিল করতে হবে
বগুড়া প্রতিনিধি ▪️
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)’র সভাপতি এম আবদুল্লাহ প্রস্তাবিত প্রেস কাউন্সিল আইনের সংশোধনী এবং সম্প্রতি জারিকৃত তথ্য পরিকাঠামো বিষয়ক পরিপত্রকে স্বাধীন সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আঘাত হিসেবে বর্ণনা করে এ দুটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৫ ধারার দোহাই দিয়ে জারিকৃত তথ্য পরিকাঠামো পরিপত্র প্রতারণামূলক। সাংবাদিক সমাজ এটা প্রত্যাখ্যান করছে।
সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন। শনিবার (৮ অক্টোবর) সকালে শহরের টিএমএসএস অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি মির্জা সেলিম রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএফইউজে’র মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন বিএফইউজে’র সহসভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন ও দপ্তর সম্পাদক তোফায়েল হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র সাধারণ সম্পাদক গণেশ দাস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম আবদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ আজ সত্যিকারের সংবাদমাধ্যমবিহীন রাষ্ট্রে পরিনত হয়েছে। আমাদের সংবাদপত্র ও মিডিয়ায় বর্তমানে সত্যিকারের সংবাদমাধ্যমের চরিত্র নেই। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলেই গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরে। শেখ মুজিব যেমন বাকশাল কায়েম করে মাত্র ৪টি প্রচারপত্র রেখে সকল সংবাদপত্র বন্ধ করেছিলেন, একই ধারায় বর্তমান সরকার নানান বিতর্কিত কালা-কানুন করে গণমাধ্যমকে ভয়-ভীতির মধ্যে রেখেছে। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ জাতীয় নির্বাচন এলেই গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে নতুন নতুন কালা-কানুন তৈরি করে। এসব করে তারা গণমাধ্যমকে ভীতির মধ্যে রাখে। ২০১৩ সালে নির্বাচনের আগে তথ্য প্রযুক্তি সংশোধন করে কুখ্যাত ৫৭ ধারা যুক্ত করেছে। মধ্যরাতের ভোটের চিত্র যাতে গণমাধ্যম প্রকাশ করতে না পারে সেজন্য ২০১৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে। এবার প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকার সাংবাদিকদের পায়ে নতুন করে শিকল পরানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এই আইনে কেউ অভিযোগ না করলেও প্রেস কাউন্সিল নিজেরা চাইলে একটি সংবাদপত্রের ডিক্লারেশন বাতিল করতে পারবে। একজন সাংবাদিককে সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। এসব করে সরকার মূলত: গণমাধ্যমের পায়ে নতুন করে শিকল পরাতে চায়। আমরা এই বিতর্কিত সংশোধনী প্রত্যাখ্যান করছি। এম আবদুল্লাহ আরও বলেন, আওয়ামীলীগের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ২০০৯ সাল থেকে এপর্যন্ত ৫০জন সাংবাদিক খুন হয়েছে। প্রতি মাসে ১৫-২০জন সাংবাদিক হামলা-মামলা শিকার হচ্ছেন। আর কোন পেশাজীবি এতটা নির্মম জুলুমের শিকার হননি। তিনি বলেন, সম্প্রতি তথ্য পরিকাঠামোর পরিপত্র জারির মাধ্যমে সরকার নতুন করে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে। তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে পূঁজি করে ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে তথ্য পরিকাঠামো ঘোষণা করেছে। আমরা এই পরিপত্র প্রত্যাখ্যান করে অবিলম্বে এই গণমাধ্যমবিরোধী পরিপত্র বাতিলের জোর দাবী জানাচ্ছি।
বিএফইউজে’র মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন বলেন, গণমাধ্যমবিরোধী ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন না হলে দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরে আসবেনা। এজন্য সরকারবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সাংবাদিক সমাজকে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে।
সাধারণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বগুড়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রেজাউল হাসান রানু, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র সাবেক সভাপতি মীর সাজ্জাদ আলী সন্তোষ ও সৈয়দ ফজলে রাব্বী ডলার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এফ শাহজাহান ও আলহাজ্ব মমিনুর রশিদ শাইন, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র সহসভাপতি আব্দুর রহিম, সাবেক সহসভাপতি আব্দুস সাত্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ মন্ডল, দপ্তর সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ ফেরদৌসুর রহমান, নির্বাহী সদস্য আতাউর রহমান মিলন, সিনিয়র সদস্য আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল খালেক নান্নু প্রমূখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ।